কোলকাতার কাছকাছি ৯ টি অফবিট পিকনিক স্পট - অল্প খরচ , আরাম বেশী

 

1. বিশ্রাম বাগানবাড়ি

ইছামতী নদীর ধারে বাগানবাড়ি বিশ্রাম। নামেই আরাম! খুব বেশি দূর নয়৷ যেতে হবে টাকি। পিকনিকের জন্য আদর্শ। পিকনিকের মাঝে ঘুরে আসা যায় মাছরাঙা দ্বীপ। খুব রােমাঞ্চকর জানি! আগে বলা থাকলে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। নিজেরাও রান্নার লোক নিয়ে যেতে পাঁব্রেন। ভাড়া- রাত্রিবাস করলে ছাবল বে ৬৫০ টাকা। 

পিকনিকের জন্য ভাড়া ৭২৫০ টাকা। যােগাযােগ: 09007012271


2. নন্দী বাগানবাড়ি

ব্যারাকপুরের কাছেই দেবপুর। ছ'বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে চমৎকার এক পিকনিক স্পট-- নন্দী বাগানবাড়ি। আছে গাছগাছালি ঘেরা দোতলা বাংলাে। উঁচু পাঁচিলে ঘেরা। মরশুমি ফুলে ভরে ওঠে বাগান। ফুলের জলসায় বেশ লাগে নন্দী বাগানবাড়ি! আছে দিঘিও। তার পাড়ে বসে গল্পগুজবে কেটে যাবে পিকনিকের অলস দুপুর। কিংবা একাকী বসে থাকতেও বেশ লাগে। ছােটদের জন্য ব্যবস্থা ভিন্ন। পিকনিকের অবসরে একফাঁকে ঘুরেও আসতে পারেন গান্ধীঘাট, মঙ্গল পান্ডে উদ্যান। 

শনি, রবি এবং ছুটির দিন ভাড়া- ১২০০০, অন্যান্য দিন ১০০০০ টাকা। বারাসত-ব্যারাকপুর রােড ধরে দেবপুকুর ন'কিমি। যােগাযোগ: 09883394992.



3. পুস্পবন 

শীতকালে পিকনিকের অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় জায়গা ডায়মন্ড হারবার। সেখানেই হয়েছে চমৎকার এই পিকনিক স্পট পুষ্পবন । অপূর্ব। গাছগাছালি আর মরশুমি ফুলের মেলা। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পঙ্গ। শীতের হিমেল হাওয়া গঙ্গার জলস্পর্শে আরও হিম হয়ে যখন শরীর ছুঁয়ে যায় তখন এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়ে শিহরন জাগায়। গঙ্গার জলে বিলি কেটে দেয় উলুরে হিমেল বাতাস! পুষ্পবনের অদূরেই কেল্লার খগুহ। পগি আর হংলেঞ্জ আমলে তৈরি। পিকনিকের অবসরে ঘুরে এলে ভাল লাগবে। পুষ্পবনে পিকনিক স্পট দু'টি। ভাড়া'- ৪০০০ এবং ৫০০০  হাজার টাকা। ব্যাসাঞ্জ বাথ সহ দল।  যােগাযােগ: জয়ন্ত চৌধুরী, ফোন- 09831039032, যেতে হবে শিয়ালদা থেকে ডায়মন্ড হারবার লােকালে ডায়মন্ড হারবার নেমে টাটাতে ৭৬ নম্বর বাসস্ট্য। মনুয়া হােটেলের বিপরীতে পুষ্পবন। সড়কপথে ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার রাস্তা।


4. বনকাটি

অজয় নদীর ধারে ছােট্ট মনােরম এক গ্রাম বনকাটি। পশ্চিম বর্ধমানের বাংলার এই গ্রামে টেরাকোটা মন্দির আর পিতলের রথ মুগ্ধ করবেই। যেমন মুগ্ধ করেছিল শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুকে। গ্রাম বাংলার প্রায় সব গ্রামেই একটা চণ্ডীমণ্ডপ আর কালীতলা পাওয়া যায়। এই গ্রামেও তার অন্যথা নেই। এখানে রেখদেউল আর আটচালার মন্দির, পঞ্চরত্ন মন্দির দেখলে বিস্মিত হতে হয়! শুধু স্থাপত্য নয়, মন্দির-গায় টেরাকোটার কাজ দেখতে দেখতে বিস্ফারিত হবে চোখ! রামায়ণ, মহাভারত, রাধাকৃষ্ণর নৌকাবিলাস, ইংরেজ চরিত্রের সঙ্গে ওই আমলের টমটম গাড়ি-সহ আর কত কী রয়েছে পােড়ামাটির কাজে! এইসব চাক্ষুষ করার সময় ফিরিয়ে দেবে সেকালে। সেইসব শিল্পীদের কাছে যাঁরা পােড়ামাটিতে ফুটিয়ে তুলেছিলেন এইসব শিল্পকর্ম। অবাক করবে সুদৃশ্য পিতলের রথটি! গড় জঙ্গলের কাছেই বা এলাকার মধ্যেই বনকাটি। এই গড় জঙ্গলের গভীরে শ্যামারূপার মন্দির। দুর্গার এক রূপ। মন্দিরের আছে এক মস্ত সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করতেন দেবী চৌধুরানি। জানা যায়, সুড়ঙ্গটি গড় জঙ্গলের গভীরে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে। তবে এখন এই সুড়ঙ্গ-মুখ বন্ধ। গড় জঙ্গলে মুক্ত ময়ূর ঘুরে বেড়ায়। ঘেরাটোপে রয়েছ ৭০-৭৫টি হরিণের দল। অজয় নদী আর গড় জঙ্গলে মােড়া জায়গাটি বেশ লাগে ছুটি কাটানাের জন্য।

কীভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে বনকাটির দূরত্ব প্রায় ১৭৬ কিমি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ধরে বর্ধমান, পানাগড় হয়ে দার্জিলিং মােড়। এখান থেকে ১৮ কিমি এগারাে মাইল বাসস্ট্যান্ড। এখান থেকে বাঁদিকে ন'কিমি দেউল। দেউল থেকে বনকাটি পাঁচ কিমি। 

কোথায় থাকবেন: দেউল পার্ক রিসর্ট, কটেজের ভাড়া ১৬৮০ টাকা, এসি ডাবল বেড ১২৬০ টাকা, নন এসি ৮০০ টাকা, পাঁচ শয্যার ঘর ১৫০০ টাকা, ছ’শয্যার ঘর ২০০০ টাকা, ১৫ শয্যার এসি ঘর ৫০০০ টাকা, নন এসি ৪৫০০ টাকা। 


5. মন নিয়ে

ভাবছেন পরিচালক সলিল সেনের উত্তমকুমার-সুপ্রিয়া অভিনীত ছবির কথা বলছি। না, তা একেবারেই নয়। এটি হল পিকনিকের জায়গা-- মন নিয়ে। রােম্যান্টিক নাম। জায়গাটিও বেশ রােম্যান্টিক। পিকনিকে গিয়ে আরও রােম্যান্স জাগবে যখন দেখবেন আস্ত একটা সুইমিং পুল আছে আপনার অপেক্ষায়। এমনটাই আছে দত্তপুকুর শিবালয় কবরখােলায় 'মন নিয়ে গার্ডেনে। পাহাড়, ঝরনাও আছে। সবই কৃত্রিম। পুরাে বাগানটাই লন। অভ্যাগতদের জন্য ফুটে থাকে কতশত রং-বেরঙের ফুল! গাছগাছালির ছায়ায় রােদুরের আঁকিবুকি কাটা। মাঠে লুটোপুটি খায় রােদুর গা-ভিজিয়ে দিন লনের রোদুরে । দিঘির পাড়ে বসে গল্পগুজবও করতে পারেন। তবে সবকিছুই কোভিড নিয়ম মেনে। পিকনিক স্পটের সঙ্গে দোতলার একতলাটি দেওয়া হয়। ভাড়ার কোনও হেরফের নেই। প্রতিদিনই ভাড়া- ৩২৫০০ টাকা। বারাসত ডাকবাংলাের মােড় কৃষ্ণনগর রােড ধরে কমবেশি ১১ কিমি। 

যোগাযােগ: 09831789014.


6. নীলদীপ গার্ডেন

সবুজের সমারােহে নীলদীপ গার্ডেনের রূপ-সৌন্দর্য ফেটে পড়েছে। গাছগাছালির পাতার ফাঁকে রােদুরে আলােছায়ার আলপনা দেয়! মরশুমি ফুলের ওপর রােদ এসে খেলা করে। কতসব রঙিন ফুল ফুটে আনন্দ দান করে অতিথিদের। সবমিলিয়ে প্রকৃতির মাঝে। অপরূপা নীলদীপ গার্ডেন। চড়ুইভাতি এসে সময় কাটানাের আদর্শ জায়গা এই বাগিচা । ছােটদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। তাদের বিনােদনের ব্যবস্থা অাছে। নীলদীপের আছে নিজস্ব রেস্তরাঁ। আগে বলে রাখলে ব্রেকফাস্ট টু লাঞ্চ সব মিলবে। ভাড়া- শনি, রবি এবং ছুটির দিন ১৪০০০ টাকা, অন্যান্য পি ১০০০০ টাকা। 

যোগাযােগ: শ্রদীপ ঘােষ, ফোন- 09890981827, 

শিয়ালদা থেকে বারুইপুর লােকালে বারুইপুর নেমে অটোতে স্লোগাইলপুকুর মােঞ্চ, কাছেই নীলগী গার্ডেন। সড়কপথে বাইপাস ধরে বারুইপুর শেষে জনদিকে আমতলার রাস্তা সেখান থেকে জোগাইলপুকুর মােড়। ল্যান্ডমার্ক হল আই হসপিটাল।


7. নহবত 

সোনারপুরে পিকনিকের ছোট্ট এক চমৎকার জায়গা। নহবতের সঙ্গে বাঙালির চিরন্তন সম্পর্ক। গাছে গাছে ঘেরা নহবত মরশুমি ফুলে হাওয়া। এই বাগানবাড়িতে রয়েছে বিশ্রামঘর, খাওয়ার ঘর ইত্যাদি। পিকনিকের ফাঁকে ঘুরে আসা যাবে বহুকালের পুরনাে। লৌকিক দেবতা পঞ্চানন্দের মন্দির। স্থানীয়দের বিশ্বাস ইনি খুব জাগ্রত দেবতা। আছে বিপত্তারিণী মায়ের মন্দির। ইনিও খুব জাগ্রত। শিয়ালদা সাউথ থেকে লােকালে সােনারপুর নেমে অটোতে বােসপুকুর মােড়। পাশেই নহবত। সড়কপথে রাষ্ট্রপুর হয়ে আসতে হবে। এখান থেকে মাত্র এক কিমি। ভাড়া ৩০০০ টাকা। কোভিভের জন্য চল্লিশজনের বেশি অনুমতি নেই। যােগাযোগ: 09830781988.



8. চাণক্যপুরী 

না, না, নাম শুনে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কাছেই এই পিকনিক স্পট। সড়কপথে বাইপুর থেকে ক্যানিং ব্লোড় ধরে যেতে হবে। আর শিয়ালদা সাউথ থেকে বারুইপুর স্টেশন নেমে কানিং রোড় ধরে আট কিমি । চাণকপুরীতে আহে মুগ্ধ করা ফুলের বাগান। নৌবিহারের ব্যবস্থা আছে। ছোটদের জন্য রয়েছে বিনোদনের আলাদা ব্যবস্থা । 

ভাড়া- ১৫০০০ এবং ১৮০০০ হাজার টাকা। যােগাযােগ:

098311:38502.



9. ধুতুৱদহ

বিদ্যাধরী নদীর ধারে চমৎকার একটি রিসর্ট। গাছগাছালির সবুজ আর আকাশ নীলে মাখামাখি। চারিপাশে মনকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এখানে নিশিযাপন করা যায়। পিকনিকও করা যায় । দু' একটা দিন কাটাতে মন্দ লাগবে না। মনের আনন্দে পিকনিক করতে বেশ লাগে । 

এখানে পিকনিক করতে হলে ওদের কাছে খাবার খেতে হবে । রাত্রিযাপন করলে দিতে হবে ২৫০০ টাকা আর গাছবাড়িতে থাকলে দিতে হবে ৩৫০০ টাকা । পিকনিকের জন্য লাগবে মাথাপিছু ৯৯৯ টাকা আর রাত্রিযাপন করলে মাথাপিছু ১২০০ টাকা । পাওয়া যাবে ব্রেকফাস্ট , লাঞ্চ , সন্ধ্যের স্ন্যাক্স ও রাতে থাকলে ডিনার । লাঞ্চ বিভিন্ন রকম থাকে তবে গলদা চিংড়ী , কচি পাঠার ঝোল , ভেটকি - সহ আরো অনেক কিছু পাওয়া যায় । বাইরে থেকে খাবার নিয়ে প্রবেশ নিশেধ । নিজেদের রান্না করে খাওয়ার অনুমতি নেই ।সায়েন্স সিটি থেকে ৪১ কিমি দূরে এই ধুতুরদহ । ম্যাজিক গাড়ি পাওয়া যায় । 

যোগাযোগ করতে পারেন- ৯৮৩০৯৮৫৯৬৮ 
 




কোলকাতার কাছকাছি ৯ টি অফবিট পিকনিক স্পট - অল্প খরচ , আরাম বেশী কোলকাতার কাছকাছি ৯ টি অফবিট পিকনিক স্পট - অল্প খরচ , আরাম বেশী Reviewed by Wisdom Apps on ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২১ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.