স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক, অনুপ্রেরণামূলক, কর্ম নিয়ে, সমাজ নিয়ে, নারীদের নিয়ে, ধর্ম নিয়ে, সত্য নিয়ে ও চরিত্র নিয়ে সেরা কিছু বাণী ও উক্তি (Swami Vivekananda Bani & Quotes In Bengali) পড়ে নিন ।
স্বামী বিবেকানন্দের বাণী
“যদি সত্যিই মন থেকে কিছু করতে চাও তাহলে পথ পাবে,আর যদি না চাও তাহলে অজুহাত পাবে।”
“সাহসী লোকেরাই বড় বড় কাজ করতে পারে।”
“এক দিনে বা এক বছরে সফলতার আশা কোরো না। সবসময় শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে থাকো।”
“বিশ্ব একটি ব্যায়ামাগার যেখানে আমরা নিজেদেরকে শক্তিশালী করতে এসেছি”
“এমন কাজ করে চলো যে তুমি হাসতে হাসতে মরবে আর জগৎ তোমার জন্য কাঁদবে।”
“আমি বিশ্বাস করি যে, কেউ কিছু পাওয়ার উপযুক্ত হলে জগতের কোনো শক্তিই তাকে বঞ্চিত করতে পারে না।”
“শুধু বড়ো লোক হয়ো না… বড় মানুষ হও।”
“সারাদিন চলার পথে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হও, তাহলে বুঝবে তুমি ভুল পথে চলেছ।”
“মহাবিশ্বের সীমাহীন পুস্তকালয় আপনার মনের ভীতর অবস্থিত”
“ওঠো এবং ততক্ষণ অবধি থেমো না, যতক্ষণ না তুমি সফল হচ্ছ”
“ঘৃণার শক্তি অপেক্ষা… প্রেমের শক্তি অনেক বেশি শক্তিমান।”
“নিজের উপর বিশ্বাস না এলে… ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।”
“যা কিছু আপনাকে শারীরিক, বৌদ্ধিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল করে তোলে সেটাকে বিষ ভেবে প্রত্যাখ্যান করুন”
“জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর”
“যে মানুষ বলে তার আর শেখার কিছু নেই, সে আসলে মরতে বসেছে। যত দিন বেঁচে আছো শিখতে থাকো।”
“অনুতাপ কর না, পূর্বে যে-সব কাজ করেছ, সে-সব নিয়ে মাথা ঘামিও না, এমন কি যে-সব ভাল কাজ করেছ, তাও স্মৃতিপথ থেকে দূর করে দাও।”
“দুনিয়া আপনার সম্বন্ধে কি ভাবছে সেটা তাদের ভাবতে দিন। আপনি আপনার লক্ষ্যগুলিতে দৃঢ় থাকুন, দুনিয়া আপনার একদিন পায়ের সম্মুখে হবে”
“প্রত্যেকটি ধারণা যা আপনাকে দৃঢ় করে সেটাকে আপন করে নেওয়া উচিত এবং প্রত্যেকটি ধারণা যা আপনাকে দুর্বল করে দেয়,তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত”
“শিক্ষা হচ্ছে মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে থাকা উৎকর্ষের প্রকাশ।”
“যখন আমাদের মধ্যে অহংকার থাকে না, তখনই আমরা সবথেকে ভালো কাজ করতে পারি,অপরকে আমাদের ভাবে সবচেয়ে বেশি অভিভূত করতে পারি।”
“অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করো না,তুমি যা করতে পারো সেটা করো কিন্তু অন্যের উপর আশা করো না”
“আমাদের প্রথম কর্তব্য হল নিজেকে ঘৃণা না করা। উন্নত হইতে হইলে প্রথম নিজের উপর, তারপরে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আবশ্যিক। যাহার নিজের উপর বিশ্বাস নাই,তাহার কখনই ঈশ্বরে বিশ্বাস আসিতে পারে না।”
“কোন জীবনই ব্যর্থ হইবে না,জগতে ব্যর্থতা বলিয়া কিছু নাই।
শতবার মানুষ নিজেকে আঘাত করিবে, সহস্রবার হোঁচট খাইবে, কিন্তু পরিণামে অনুভব করিবে,
সে ঈশ্বর।”
“শেখার জন্য এটাই হল প্রথম শিক্ষা…দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হও যে বাইরের কোনো কিছুকে অভিশাপ দেবে না, বাইরের কাউকে দোষ দেবে না, কিন্তু উঠে দাড়াও নিজেকে দোষ দাও, তুমি বুঝতে পারবে নিজেকে ধরে রাখার জন্য এটাই হল সঠিক পন্থা।”
“সব শক্তিই আপনার মধ্যে আছে সেটার উপর বিশ্বাস রাখুন, এটা বিশ্বাস করবেন না যে আপনি দুর্বল। দাঁড়ান এবং আপনার মধ্যেকার দৈবত্বকে চিনতে শিখুন”
“ইচ্ছা, অজ্ঞতা এবং বৈষম্য… এই তিনটিই হলো বন্ধনের ত্রিমূর্তি”
“মনের শক্তি সূর্যের কিরণের মত, যখন এটি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয় তখনই এটি চকচক করে ওঠে।”
“কখনো না বোলোনা, কখনো বোলোনা আমি করতে পারবোনা।তুমি অনন্ত এবং সব শক্তি তোমার ভিতর আছে,তুমি সব কিছুই করতে পারো।”
“জেগে ওঠো, সচেতন হও এবং লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত থেমো না”
“মস্তিস্ককে উচ্চ মানের চিন্তা-ভাবনা দিয়ে পূর্ণ করো, দিবারাত্র এগুলোকে তোমার সামনে রেখে চলো, এগুলোর থেকে মহান কাজ বেরিয়ে আসবে।”
“নিজের জীবনে ঝুঁকি নিন, যদি আপনি জেতেন তাহলে নেতৃত্ব করবেন , আর যদি হারেন তাহলে আপনি অন্যদের সঠিক পথ দেখাতে পারবেন”
“উঠে দাঁড়াও, শক্ত হও, দৃপ্ত হও। যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নাও। আর এটা সবসময় মাথায় রেখো, তুমিই তোমার নিয়তির স্রষ্টা। তোমার যে পরিমাণ শক্তি প্রয়োজন, সবটা তোমার মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং নিজের ভবিষ্যত্ নিজেই তৈরি করে নাও।”
“একটি সময়ে একটিই কাজ কোরো এবং সেটা করার সময় নিজের সব কিছু তার মধ্যে ব্যয় করে দাও।”
“মনের মতো কাজ পেলে অতি মূর্খও করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মতো করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান। কোনো কাজই ছোট নয়।”
“সকল কাজ কর, কিন্তু অনাসক্ত হয়ে কর, কাজের জন্যই কাজ কর, কখনও নিজের জন্য কর না।”
“চালাকির দ্বারা কোনো মহৎ কর্ম হয় না।”
“কোনো বড় কাজই কঠোর পরিশ্রম ও কষ্ট স্বীকার ছাড়া হয় নি।”
“যখন তুমি ব্যস্ত থাকো তখন সব কিছুই সহজ বলে মনে হয়,কিন্তু অলস হলে কোনো কিছুই সহজ বলে মনে হয় না।”
“পেছনে তাকিও না, শুধু সামনের দিকে তাকাও… অসীম শক্তি, অসীম উদ্দম, অসীম সাহস এবং অসীম ধৈর্য…এরা একাই পারে মহান কোনো কর্ম সম্পন্ন করতে।”
“যা পারো নিজে করে যাও, কারও ওপর আশা বা ভরসা কোনোটাই কোরো না।”
“কখনও বড় পরিকল্পনার হিসাব করবেন না, ধীরে ধীরে আগে শুরু করুন,আপনার ভূমি নির্মাণ করুন তারপর ধীরে ধীরে এটিকে প্রসার করুন”
“কাজ করো নির্ভীকভাবে। এগিয়ে চলো সত্য আর ভালোবাসা নিয়ে।”
“নিজেদের বিপদ থেকে টেনে তোলো! তোমার উদ্ধার-সাধন তোমাকেই করতে হবে। ভীত হয়ো না। বারবার বিফল হয়েছো বলো নিরাশ হয়ো না। কাল সীমাহীন, অগ্রসর হতে থাকো, বারবার তোমার শক্তি প্রকাশ করতে থাকো, আলোক আসবেই।”
“যে রকম বীজ আমরা বুনি, সে রকমই ফসল আমরা পাই। আমরাই আমাদের ভাগ্য তৈরী করি, তার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, কাউকে প্রশংসা করারও কিছু নেই। ”
“মনে করিও না, তোমরা দরিদ্র। অর্থই বল নহে… সাধুতাই-পবিত্রতাই বল। আপনাতে বিশ্বাস রাখো। প্রবল বিশ্বাসই বড় কাজের জনক।”
“সমাজ অপরাধীদের কারণে খারাপ হয়না বরং ভালো মানুষদের নীরবতার কারণে হয়”
“জগতে মায়ের স্থান সকলের উপরে, কারণ মাতৃভাবেই সবচেয়ে বেশি নিঃস্বার্থপরতা শিক্ষা ও প্রয়োগ করা হয়।”
“গোলামীর উপর যে সম্পর্কটা দাঁড়িয়ে আছে, সেটা আবার কখনও ভালো হতে পারে?
যেখানে মেয়েদের স্বাধীনতা নেই,সে জাত কখনো উন্নতি করতে পারে না।”
“একটি রাষ্ট্রের অগ্রগতি জানার সবচেয়ে ভাল উপায় হল সেই রাষ্ট্রে নারীর অবস্থান”
“ভারতের জননীই আদর্শ নারী। মাতৃভাবই আদর্শ ও শেষ কথা।”
“মেয়েদের উন্নতি করতে পারো? তবে আশা আছে। নইলে পশু জন্ম ঘুচবে না।”
“সেই নারীও ধন্য যার চোখে পুরুষ ভগবানের পিতৃভাবের প্রতীক।”
“ভারতীয় নারীদের যে রকম হওয়া উচিত, সীতা তার আদর্শ।”
“আমাদের দেশের মেয়েরা তেমন শিক্ষিতা নয় বটে, কিন্তু তারা অনেক বেশি প্রবিত্র।”
“আমরা স্ত্রীলোককে নিচ, অধম, মহা হেয়, অপবিত্র বলি। তার ফল… আমরা পশু, দাস, উদ্যমহীন, দরিদ্র।”
“পাঁচশো পুরুষের সাহায্যে ভারতবর্ষকে জয় করতে পঞ্চাশ বছর লাগতে পারে,কিন্তু পাঁচশো নারীর দ্বারা মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা করা যেতে পারে।”
স্বামী বিবেকানন্দের ৬৬ বাণী ও উক্তি | Swami Vivekananda Bani & Quotes In Bengali
“সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের স্বভাবের প্রতি সত্য থাকা, নিজের প্রতি বিশ্বাস করুন”
“ধর্ম এমন একটি ভাব, যাহা পশুকে মনুষ্যত্বে ও মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে।”
“প্রবিত্র ও নিঃস্বার্থ হতে চেষ্টা কোরো, তার মধ্যেই রয়েছে সমস্ত ধর্ম।”
“প্রার্থনা করা অপেক্ষা প্রাণ খুলিয়া হাসা অনেক ভালো। গান কর। দুঃখের হাত হইতে নিষ্কৃতি লাভ কর।”
“ভগবান যদিও সর্বত্র আছে বটে, কিন্তু তাঁকে আমরা জানতে পারি কেবল মানব চরিত্রের মধ্য দিয়ে।”
“জগতে যদি কিছু পাপ থাকে, তবে দুর্বলতায় সেই পাপ। সকল প্রকার দুর্বলতা ত্যাগ করো… দুর্বলতায় মৃত্যু, দুর্বলতায় পাপ।”
“প্রথমে অন্নের ব্যবস্থা করতে হবে, তারপর ধর্ম”
“মানুষের সেবাই হলো ভগবানের সেবা”
“শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম। দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ। অপরকে ভালোবাসাই ধর্ম, অপরকে ঘৃণা করাই পাপ।”
“যত বেশি আমরা বাইরে গিয়ে অন্যদের ভালো করবো, আমাদের হৃদয় ততই বিশুদ্ধ হবে এবং ভগবান সেখানে বাস করবেন”
“ঈশ্বর ব্যতীত জীবনের উচ্চতর লক্ষ্য আর কি হইতে পারে? ঈশ্বর স্বয়ংই মানুষের সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাঁহাকে দর্শন কর, তাঁহাকে সম্ভোগ কর, ঈশ্বর অপেক্ষা উচ্চতর বস্তু আমরা ধারণাই করিতে পারি না, কারণ ঈশ্বর পূর্ণস্বরূপ।”
“সত্যের জন্য সব কিছুকে ত্যাগ করা চলে, কিন্তু কোনো কিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা চলে না।”
“সত্যকে হাজার আলাদা আলাদা উপায়ে বলা যেতে পারে, তারপরেও সব কিছু সত্যই থাকে”
“শক্তিই জীবন, দুর্বলতাই মৃত্যু, বিস্তারই জীবন, সংকোচনই মৃত্যু, প্রেমই জীবন, ঘৃণাই মৃত্যু”
“তুমি যখন নিজেকে দেহমাত্র বলিয়া ভাব, তখন তুমি বিশ্বজগৎ হইতে বিচ্ছিন্ন, নিজেকে যখন জীব বলিয়া ভাব, তখন তুমি সেই শাশ্বত মহান্ জাতির একটি কণিকামাত্র, আর যখন নিজেকে আত্মা বলিয়া ভাব, তখন তুমিই সব কিছু।”
“আমরা যেন প্রদীপ-স্বরূপ, আর ঐ প্রদীপের জ্বালাটাকেই আমরা ‘জীবন’ বলি। যখনই অম্লজান ফুরিয়ে যাবে, তখনই আলোটাও নিবে যাবে। আমরা কেবল প্রদীপটাকে সাফ রাখতে পারি। জীবনটা কতকগুলি জিনিষের মিশ্রণে উৎপন্ন, সুতরাং জীবন অবশ্যই তার উপাদান-কারণগুলিতে লীন হবে।”
“উঁচুতে উঠতে হলে তোমার ভেতরের অহংকারকে বাহিরে টেনে বের করে আনো, এবং হালকা হও… কারণ তারাই ওপরে উঠতে পারে যারা হালকা হয়।”
“জগতে এখন একান্ত প্রয়োজন হল চরিত্র, জগত এখন তাদের চায় যাদের জীবন প্রেমদীপ্ত ও স্বার্থ শূন্য।”
“যারা তোমাকে সাহায্য করেছে, তাদের কখনও ভুলে যেও না। যারা তোমাকে ভালোবাসে, তাদের কখনও ঘৃণা কোরো না। যারা তোমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কখনও ঠকিয়ো না।”
“সেবা করো তাৎপরতার সাথে। দান করো নির্লিপ্ত ভাবে। ভালোবাসো নিঃস্বার্থভাবে। ব্যয় করো বিবেচনার সাথে। তর্ক করো যুক্তির সাথে। কথা বলো সংক্ষেপে।
“যেই রকম আপনি ভাববেন ঠিক সেইরকমই আপনি হয়ে যাবেন। যদি আপনি নিজেকে দুর্বল হিসাবে বিবেচনা করেন তাহলে আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন আর আপনি যদি নিজেকে শক্তিশালী মনে করেন, তাহলে আপনি শক্তিশালী হয়ে উঠবেন”
অপরের দোষত্রুটি দেখিয়া বেড়ান তো আমাদের কাজ নয়। উহাতে কোন উপকার হয় না। এমন কি, ঐগুলির সম্বন্ধে আমরা চিন্তাও যেন না করি। সৎ চিন্তা করাই আমাদের উচিত। দোষের বিচার করিবার জন্য আমরা পৃথিবীতে আসি নাই। সৎ হওয়াই আমাদের কর্তব্য।
স্বামী বিবেকানন্দের সেরা বাণী কি ?
“নিজের উপর বিশ্বাস না এলে…
ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।”
স্বামী বিবেকানন্দের আসল নাম কি ছিল?
নরেন্দ্রনাথ দত্ত
স্বামী বিবেকানন্দ কিসের জন্য বিখ্যাত?
স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৩ সালের বিশ্ব ধর্ম সংসদে তাঁর যুগান্তকারী বক্তৃতার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এছাড়াও তিনি একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের প্রধান শিষ্য ছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দের পিতার নাম কি?
বিশ্বনাথ দত্ত
স্বামী বিবেকানন্দের মাতার নাম কি?
ভুবনেশ্বরী দেবী
কোন ধর্মের স্বামী?
হিন্দু , সনাতনী ধর্মের
স্বামী বিবেকানন্দ কি বিয়ে করেছিলেন?
না , তিনি একজন সন্ন্যাসী ছিলেন
স্বামী বিবেকানন্দ কিভাবে মারা গিয়েছিলেন?
স্বামী বিবেকানন্দ তার মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যাওয়ার কারণে ৪-ঠা জুলাই, ১৯০২ সালে ৩৯ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন।
"জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর!"
"ওঠো, জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।
"কারও জন্য অপেক্ষা করাে না, যা তুমি করতে পারাে তা দিয়েই শুরু করাে।"
"ইচ্ছাশক্তিই জগৎ কে পরিচালিত করে থাকে।"
"একটি লক্ষ্য গ্রহন কর এবং সেই লক্ষ্যের উপর নিজের ধ্যান-জ্ঞান চিন্তা ধারাকে উৎসর্গ কর।"
"নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো তোমার দ্বারাই সব সম্ভব জগতে এমন কিছু নেই যা তুমি পারবে না। এই সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাও তুমি সাফল্য পাবেই।"
"আমি বিশ্বাস করি যে কেউ কিছু পাওয়ার উপযুক্ত হলে জগতের কোন শক্তিই তাকে বঞ্চিত করতে পারে না। "
"যে সমস্ত জ্ঞান তােমায় শক্তিশালী মজবুত করে তাকে গ্রহণ করাে এবং যে বিচার ও জ্ঞান তােমায় দুর্বল করে দেয় তাকে দূর করা দরকার।"
"যদি কোনদিন আপনার চলার পথে কোনো সমস্যা না আসে, তাহলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনি ভুল পথে হাটছেন।"
"একদিনে বা একবছরে সফলতার আশা করো না, সবসময় শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে রাখাে।"
'ভয় ও অপূর্ণ ইচ্ছাই আমাদের দুঃখের প্রধান কারণ।
"পবিত্র ও নিঃস্বার্থ হতে চেষ্টা কর তার মধ্যেই রয়েছে সমস্ত ধর্ম।"
"আমাদের জীবন আমাদের চিন্তার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাই সর্বদা জীবনে ভালাে চিন্তা করা দরকার। "
"সফলতা এবং ব্যর্থতা দুটিই আমাদের জীবনের অংশ কিন্তু কেউই চিরস্থায়ী নয়।"
"ভগবান তাকেই সাহায্য করে যে নিজেকে নিজে সাহায্য করে।"
"মানুষ জ্ঞানের পরিচয় দেয় তার কথায়, যোগ্যতার পরিচয় দেয় তার কর্মে, আর বংশের পরিচয় দেয় তার ব্যবহারে।"
“তুমি যা চিন্তা করবে তা-ই হয়ে যাবে। যদি তুমি নিজেকে দুর্বল ভাবো তবে দুর্বল হবে এবং তেজস্বী ভাবলে তেজস্বী হবে।”
"একাকীত্ব তোমায় যা শেখাবে পৃথিবী কোন ভালো বই তোমায় তা শেখাতে পারবে না।"
"ধর্ম মানে শুধু মতবাদ নয়, ধর্ম মানে সাধনা। সৎ হওয়া আর সৎ কর্ম করা এই দুয়ের মধ্যেই সমগ্র ধর্ম।"
“শিক্ষা হচ্ছে মানুষের অন্তর্নিহিত সত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ।”
“আমরা সেই শিক্ষা চাই যার দ্বারা চরিত্র গঠিত হয়, মনের জোর বাড়ে ও বুদ্ধি বিকশিত হয়।"
"তোমাকে ভিতর থেকে বাড়তে হবে তোমাকে কেউ ততক্ষণ শিক্ষিত করতে পারবে না যতক্ষণ না তুমি নিজ থেকে চেষ্টা করছো। মনে রাখবে আপনার নিজের আত্মা থেকে কোনও বড়ো শিক্ষক আর নেই।"
"যতক্ষন বেঁচে রয়েছ, শিখতে থাকো। কারণ অনুভব জীবনের সবথেকে বড় শিক্ষক।"
"তুমি যদি সঠিক হও তাহলে তা প্রমান করার চেষ্টা করো না। চুপচাপ অপেক্ষা করো সময় সবকিছুর জবাব দিয়ে যাবে।"
"আবেগের পথে না চলে বিবেকের পথে চলো দেখবে তুমি তোমার জীবনটা সুন্দর করে গড়তে পারবে কারণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদালত হলো মানুষের বিবেক।"
“যদি সত্যিই মন থেকে কিছু করতে চাও তাহলে পথ পাবে আর যদি না চাও তাহলে অজুহাত পাবে।”
“মহাবিশ্বের সীমাহীন পুস্তকালয় আপনার মনের ভিতর অবস্থিত”
"আমরা কখনোই কোনো বিষয় ছাত্রদের ওপর চাপিয়ে দেব না। ছাত্র তার নিজের অনুসন্ধিৎসা এবং অভীপ্সা অনুসারে শিক্ষিত হবে। আমরা সাহায্য করব মাত্র।”
" কারো উপর প্রতিশোধ নেওয়ার আনন্দ কয়েক দিন থাকে কিন্তু ক্ষমা করার আনন্দ আজীবন থেকে যায়। "
"আপনার মহিলাদের প্রথমে শিক্ষিত করুন এবং তাদের নিজের মতো ছেড়ে দিন, তারপরে তারা আপনাকে বলবে যে তাদের জন্য কী কী সংস্কার প্রয়োজন।"
“চারাগাছকে যেমন জোর করে বাড়ানো যায় না, শিশুকেও তেমনি চেষ্টা করে শিক্ষা দেওয়া যায় না। চারাগাছটি স্বভাব অনুসারে বর্ধিত হয়। শিশু নিজেই শিক্ষা লাভ করে।"
“শিক্ষক চরিত্রের অপাপবিদ্ধতা, চিত্তশুদ্ধি, নির্লোভতা, শাস্ত্রের যথার্থ মমার্থ জ্ঞান, প্রেমপরতা অত্যাবশ্যক।”
“পশ্চিমের বিজ্ঞান আর প্রাচ্যের ধ্যান, পশ্চিমের কর্মশক্তি আর প্রাচ্যের ধর্মবোধ, এই দুয়ের মধ্যে একটি সুস্থ মিলন চাই।"
"চালাকির দ্বারা কোন মহৎ কাজ হয় না।"
"জ্ঞান, ভক্তি, যোগ এবং কর্ম মুক্তির এই চারটি পথ। প্রত্যেকের কর্তব্য তার উপযুক্ত পথ অনুসরণ করে চলে। তবে এই যুগে কর্মযোগের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।"
"একটি সময়ে একটি কাজ করাে এবং সেটা করার সময় নিজের সবকিছুই তার মধ্যে ব্যয় করে দেও।"
" ভাগ্য বলে কিছু নেই- যা আছে তা হল শুধুমাত্র কর্মের ফল যা প্রত্যেকের চেষ্টা ও যত্নের ফলে গড়ে ওঠে। "
"জগৎ সংসার কি ভাবছে, সে দিকে তােমার চিন্তা করার কিছুই নেই দুনিয়াকে ভাবতে দাও কিন্তু তুমি তােমার কার্যে অবিচল থাকো।"
“যখন আপনি ব্যস্ত থাকেন তখন সব কিছুই সহজ বলে মনে হয় কিন্তু অলস হলে কোনো কিছুই সহজ বলে মনে হয় না”
"সৌভাগ্য" প্রতিটি ব্যাক্তির সাথে দেখা করার জন্য প্রতীক্ষা করে কিন্তু যে পরিশ্রম করে একমাত্র তার সাথেই দেখা হয়।'
"কোনাে বড় কাজই কঠোর পরিশ্রম ও কষ্ট স্বীকার ছাড়া হয়নি।"
“মনের মতো কাজ পেলে অতি মূর্খও করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মতো করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান। কোনো কাজই ছোট নয়।”
"যে-সব ব্যাক্তি নিজের সুখ-চিন্তায় একরকম উদাসীন তাঁরাই জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী হয়েছেন।"
"কর্মের উদ্দেশ্যের প্রতি যতটা মনোযোগ দেওয়া আবশ্যক ততটা মনোযোগ দেওয়া উচিত।"
" সাহসী লােকেরাই কেবল বড় বড় কাজ করতে পারে। "
"যে-সব ব্যাক্তি নিজের সুখ-চিন্তায় একরকম উদাসীন, তাঁরাই জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী হয়েছেন।"
"একটি সময়ে একটি কাজ করাে এবং সেটা করার সময় নিজের সবকিছুই তার মধ্যে ব্যয় করে দেও।"
" যার কথার চেয়ে কাজের পরিমাণ বেশি সাফল্য তার কাছেই এসে ধরা দেয়। কারণ যে নদী যত গভীর হয় তার বয়ে যাওয়ার শব্দ তত কম! "
" সময় বেশি লাগলেও ধৈর্য্য সহকারে কাজ করাে সাফল্য তুমি পাবেই। "
"পেছনে তাকিও না, শুধু সামনের দিকে তাকাও - অসীম শক্তি, অসীম উদ্যম, অসীম সাহস এবং অসীম ধৈর্য সম্পূর্ণ মানুষ পারে যে কোনো কার্য সম্পন্ন করতে।"
"সে ভীরু, কাপুরুষ যে সবসময় ভাগ্যের উপর নিজেকে ছেড়ে দেয়, যে বলে এটা ভাগ্যের পরিহাস। সেই বলশালী শক্তিশালী বীর , সেই বলে আমি আমার ভাগ্য নিজেই তৈরি করে নেব।"
" খারাপ চিন্তা ও খারাপ কর্ম তোমায় পতনের দিকে নিয়ে যাবে। অপরদিকে তোমার ভালো চিন্তা ও ভালো কর্ম দেবদূতের মতো তোমায় অনন্তকাল রক্ষা করবে।"
"যে ক্ষমতাশালী হওয়ার সাথে সাথে চিন্তাবিদ হয়। যে গতানুগতিকতা থেকে সকলকে মুক্ত করে নতুন দিশা দেখায়, সেই একমাত্র যুবক।"
"সমস্ত শক্তিই তােমার ভেতরে বিরাজমান, নিজেকে কখনােই দুর্বল ভেবাে না। ওঠো নিজেকে জাগিয়ে তােলাে, নিজের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তােলাে৷ তারপর দেখ জগৎ একদিন তােমার হাতের মুঠো।"
"মানুষকে সর্বদা তার দুর্বলতার বিষয় ভাবতে বলা, তার দুর্বলতার প্রতীকার নয়। তার শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়াই প্রতিকারের উপায় ৷ তার মধ্যে যে শক্তি আগে থেকেই বর্তমান তার বিষয় স্মরণ করিয়ে দাও।"
"সত্যের জন্য সবকিছুকে ত্যাগ করা চলে কিন্তু কোনােকিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা চলে না।"
"সত্যকে তুমি যতবার যেইভাবেই বোলো না কেন - তা সবসময় সত্যিই থাকবে।"
"আরাম" কখনো সত্যের পরীক্ষা নয় অপরদিকে সত্য প্রায়শই "সাচ্ছন্দের" থেকে অনেক দূরে থাকে "
"অপমানের উচিত শিক্ষা অপমান নয়। এমন কিছু করে দেখাও যেন সে নিজের কাছেই নিজে ছােট হয়ে যায়।"
"জগতে পাপ বলে যদি কিছু থাকে দুর্বলতাই হল সেই পাপ সেজন্য সর্বপ্রকার দুর্বলতা ত্যাগ করা দরকার। "
"প্রেম ও সপ্রেম ও সহানুভূতিই একমাত্র পন্থা। ভালবাসাই একমাত্র উপাসনা। "
"আমাদের জীবন আমাদের চিন্তার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে তার জীবনে ভালাে চিন্তা করা জরুরি।”
"বিশ্বাসঘাতককে গালাগালি না দিয়ে ধন্যবাদ বলুন কারণ সে তোমাকে মানুষ চিনতে শিখিয়েছে।”
"যারা তােমাকে সাহায্য করেছে, তাদের কখনও ভুলে যেও না। যারা তােমাকে ভালােবাসে, তাদের কখনও ঘৃনা করে না। যারা তােমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কখনও ঠকিয়াে না।"
"যখন আমাদের মধ্যে অহংজ্ঞান থাকে না, তখনই আমরা সবচেয়ে ভালাে কাজ করতে পারি।”
"জ্ঞানী কে তার ভুল ধরিয়ে দিলে, সে তোমাকে বন্ধু বানিয়ে নেবে আর একজন মূর্খ কে তার ভুল দেখালে, সে তোমাকে শত্রু ভেবে নেবে।”
"ভগবান থাকে ভালোবাসেন তাকেই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা করেন ।”
"তর্কের চেয়ে নিরবতা ভালো প্রতিশোধ নেওয়ার চেয়ে রাস্তা বদলে ফেলা ভালো আর সার্থপর লোকের পাশে চলার চেয়ে একলা চলা ভালো ।”
" তর্ক করে জয়ী হবার চেয়ে চুপ থেকে হেরে যাওয়াই ভালো, কেননা বুদ্ধিমানেরা পরাজয়ে ভয় করে না বরং উপভোগ করে মুর্খদের উল্লাস দেখে!
"পূর্ন নারীত্বের বিচারই হল পূর্ণ স্বাধীনতা।”
"আমাদের দেশের মেয়েরা তেমন শিক্ষিত নয় বটে, কিন্তু তারা অনেক বেশি পবিত্র।”
"পাঁচশো পুরুষের সাহায্যে ভারতবর্ষকে জয় করতে পঞ্চাশ বছর লাগতে পারে কিন্তু পাঁচশো নারীর দ্বারা মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা করা যেতে পারে।”
"নারীজাতির উন্নতি এবং জনমার্গের জাগরণ এই দু'টিরই প্রয়োজন সর্বপ্রথম এবং তখনই কোনো দেশের তথা সমগ্র জগতের প্রকৃত কল্যাণ হতে পারে।"
" পুত্র সন্তান যদি এক বংশের প্রদীপ হয়, তাহলে কন্যা সন্তান দুই বংশের প্রদীপ। "
" সেই পরিবার বা দেশের জন্য কোনও আশা নেই যেখানে মহিলাদের কোনও অনুমান নেই, যেখানে তারা দুঃখে থাকেন। এই কারণে তাদের প্রথমে উত্থাপন করতে হবে। "
" আপনি কি আপনার মহিলাদের অবস্থা উন্নত করতে পারেন? তারপরে আপনার মঙ্গল কামনার আশা থাকবে। নইলে আপনি এখনকার মতো পিছিয়ে থাকবেন। ”
" মহিলারা অনন্তকাল ধরে কষ্ট ভোগ করেছেন এবং এটিই তাকে অসীম ধৈর্য ও অসীম অধ্যবসায় দিয়েছে। "
"নারী ততোটাই সাহসী যতটা পুরুষ।"
“নারীদের পাশ্চত্য জ্ঞান ও বিজ্ঞান যেমন শেখাতে হবে, তেমনি জাগাতে হবে ভারতীয় আদর্শ ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা।”
" একটি লক্ষ্য নিয়ে সেই লক্ষ্যকে তােমার জীবন বানিয়ে নাও! সেই লক্ষ্যকে নিয়েই সারাক্ষণ চিন্তাভাবনা করাে ওই লক্ষ্য নিয়েই স্বপ্ন দেখাে এবং সেই লক্ষ্যকে পূরণ করার জন্য সবকিছু করাে।"
" জীবনে অনেক লক্ষ্য থাকা জরূুরি নয় কিন্তুু যে লক্ষ্যটি আছে তাপূর্ণ করা জরুরি দুনিয়া তােমার সম্বন্ধে কি ভাবছে সেটা তাদের ভাবতে দাও , তুমি তােমার লক্ষ্যগুলিতে দৃঢ় থাকো। কখনাে না বলো না, তুমি চেষ্টা করলে সব কিছুই করতে পারাে, তুমি অনন্ত শক্তির আধার। তােমার মধ্যে সমস্ত শক্তি রয়েছে, তুমি সব কিছুই করতে পারাে।"
"কাউকে নিন্দা করাে না, যদি তুমি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারাে তাে দাও।"
"যে মানুষ সর্বদা অন্যের সেবা করে সেই মহান ।"
"কখনাে কারাের নিন্দা করাে না তুমি যদি তাকে সাহায্য করতে পারাে তাহলে করে, তাহলে তাকে নিজের মতাে জীবনে এগােতে দাও।"
“দরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে আমি যেন ঈশ্বরকে দেখি নিজের মুক্তির জন্য তাদের কাছে গিয়ে তাদেরই পূজা করবো, ঈশ্বর তাদের মধ্যে রয়েছেন।"
"যারা তোমাকে সাহায্য করেছে তাদের কখনো ভুলে যেও না। যারা তোমাকে বিশ্বাস করে তাদের কখনো ঠকিও না।"
"জগতে এখন একান্ত প্রয়োজন হল চরিত্র; জগত এখন তাদের চায় - যাদের জীবন প্রেমদীপ্ত ও স্বার্থ শূন্য।"
"ত্যাগ ব্যতীত কিছুই হইতে পারে না। অন্যকে যদি সাহায্য করিতে চাও, তবে তোমার নিজের অহংকে বিসর্জন দিতে হইবে।"
“প্রবিত্র ও নিঃস্বার্থ হতে চেষ্টা কোরো তার মধ্যেই রয়েছে সমস্ত ধর্ম।”
"যখন আমাদের মধ্যে অহংজ্ঞান থাকে না, তখনই আমরা সবচেয়ে ভালাে কাজ করতে পারি, অপরকে আমাদের ভাবে সবচেয়ে বেশি অভিভূত করতে পারি। "
"ভদ্র ভাষা আর নম্র ব্যবহার করলে মূর্খরা ভাবে লোকটি দূর্বল কিন্তু আসলে সে জানে না এই গুনটি অর্জন করা কত কঠিন।"
"উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ কাছে আসে না, স্বার্থ ছাড়া কেউ পাশে থাকে না ।"
"দিনে একবার হলেও নিজের সঙ্গে কথা বলাে তা নাহলে। তুমি দুনিয়ার সবচেয়ে মহান ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারবে না।"
"নিজের যোগ্যতার থেকে কম যোগ্যতার মানুষকে ভালোবাসো সে তোমায় অনেক বেশি মূল্য দেবে।"
"অনন্যাশ্চিন্তয়ন্তো মাং যে জনাঃ পর্যুপাসতে। তেষাং নিত্যাভিযুক্তানাং যোগক্ষেমং বহাম্যহম্।-অর্থাৎ যারা আর কারও ওপর নির্ভর না ক’রে কেবল আমার ওপর নির্ভর ক’রে থাকে,তাদের যা কিছু দরকার,সব আমি যুগিয়ে দিই। ভগবানের এ কথাটা তো আর স্বপ্ন বা কবিকল্পনা নয়।"
জনৈক সংস্কৃত কবি বলিয়াছেন-‘ন গৃহং গৃহমিত্যাহুর্গৃহিণী গৃহমুচ্যতে'—গৃহকে গৃহ বলে না,গৃহিণীকেই গৃহ বলা হয়,ইহা কত সত্য! যে গৃহছাদ তোমায় শীত গ্রীষ্ম বর্ষা হইতে রক্ষা করিয়া থাকে,তাহার দোষগুণ বিচার করিতে হইলে উহা যে স্তম্ভগুলির উপর দাঁড়াইয়া আছে,তাহা দেখিলে চলিবে না—হউক না সেগুলি অতি মনোহর কারুকার্যময় ‘করিন্থিয়ান'স্তম্ভ।
বহুরূপে সম্মুখে তোমার,ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ? জীবে প্রেম করে যেইজন,সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।
বড় হইতে গেলে কোন জাতির বা ব্যক্তির পক্ষে তিনটি বস্তুর প্রয়োজনঃ
(১) সাধুতার শক্তিতে প্রগাঢ় বিশ্বাস।
(২) হিংসা ও সন্দিগ্ধভাবের একান্ত অভাব।
(৩) যাহারা সৎ হইতে কিংবা সৎ করিতে সচেষ্ট,তাহাদিগের সহায়তা।
"হে যুবকবৃন্দ,দরিদ্র অজ্ঞ ও নিপীড়িত জনগণের ব্যথা তোমরা প্রাণে প্রাণে অনুভব কর,সেই অনুভবের বেদনায় তোমাদের হৃদয়ে রুদ্ধ হউক,মষ্তিষ্ক ঘুরিতে থাকুক,তোমাদের পাগল হইয়া যাইবার উপক্রম হউক। তখন গিয়া ভগবানের পাদপদ্মে তোমাদের অন্তরের বেদনা জানাও। তবেই তাহার নিকট হইতে শক্তিও সাহায্য আসিবে—অদম্য উৎসাহ,অনন্ত শক্তি আসিবে।"
"অন্ন! অন্ন! যে ভগবান এখানে আমাকে অন্ন দিতে পারেন না তিনি যে আমাকে স্বর্গে অনন্ত সুখে রাখিবেন—ইহা আমি বিশ্বাস করি না।"
"আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি,মানুষকে বিশ্বাস করি;দুঃখী দরিদ্রকে সাহায্য করা,পরের সেবার জন্য নরকে যাইতে প্রস্তুত হওয়া—আমি খুব বড় কাজ বলিয়া বিশ্বাস করি।"
"জতিভেদ থাকুক বা নাই থাকুক,কোন মতবাদ প্রচলিত থাকুক বা নাই থাকুক,যে-কোন ব্যক্তি, শ্রেণী, বর্ণ, জাতি বা সম্প্রদায় যদি অপর কোন ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তার ও কার্যের শক্তিতে বাধা দেয় (অবশ্য যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ শক্তি কাহারও অনিষ্ট না করে) তাহা অতি অন্যায়,এবং যে ঐরূপ করে—তাহার পতন অবশ্যম্ভাবী।"
"তোমরা সকলে ভাবো—‘আমরা অনন্ত বলশালী আত্মা;দেখ দিকি কি বল বেরোয়। ‘দীনহীনা!'কিসের 'দীনহীনা’? আমি ব্রহ্মময়ীর বেটা! কিসের রোগ,কিসের ভয়,কিসের অভাব? ‘দীনহীনা'ভাবকে কুলোর বাতাস দিয়ে বিদেয় কর দিকি।"
"তোমাদের কি মন মুখ এক হয়েছে? তোমরা কি মৃত্যুভয় পর্যন্ত তুচ্ছ ক’রে নিঃস্বার্থভাবে থাকতে পার? তোমাদের হৃদয়ে প্রেম আছে তো? যদি এইগুলি তোমাদের থাকে তবে তোমাদের কোন কিছুকে,এমন কি মৃত্যুকে পর্যন্ত ভয় করবার দরকার নেই। এগিয়ে যাও,বৎসগণ। সমগ্র জগৎ জ্ঞানালোক চাইছে—উৎসুক নয়নে তার জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।"
"আমি দৃঢ়ভাবে বলিতেছি,হিন্দুসমাজের উন্নতির জন্য ধর্মকে নষ্ট করিবার কোন প্রয়োজন নাই এবং ধর্মের জন্যেই যে সমাজের এই অবস্থা তাহা নহে,বরং ধর্মকে সামাজিক ব্যাপারে যেভাবে কাজে লাগানো উচিত,তাহা হয় নাই বলিয়াই সমাজের এই অবস্থা।"
"কেউ তোমাকে বলবে সাধু,কেউ বলবে চণ্ডাল,কেউ বলবে উন্মাদ,কেউ বলবে দানব,কোনদিকে না তাকিয়ে নিজের পথে চলে যাও,’—এই কথা বলেছিলেন বার্ধক্যে সন্ন্যাসগ্রহণকারী রাজা ভর্তৃহরি—ভারতের একজন প্রাচীন সম্রাট ও মহান্ সন্ন্যাসী।"
"কোন ধর্মকে ফলপ্রসূ করতে হ’লে তাই নিয়ে একেবারে মেতে যাওযা দরকার;অথচ যাতে সঙ্কীর্ণ সাম্প্রদায়িক ভাব না আসে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।"
"হে মহাপ্রাণ,ওঠ জাগো ! জগৎ দুঃখে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে—তোমার কি নিদ্রা সাজে?"
"হিন্দু যেন কখন তাহার ধর্ম ত্যাগ না করে। তবে ধর্মকে উহার নির্দিষ্ট সীমার ভিতর রাখিতে হইবে,আর সমাজকে উন্নতির স্বাধীনতা দিতে হইবে।"
"যে দেশে কোটি কোটি মানুষ মহুয়ার ফুল খেয়ে থাকে,আর দশবিশ লাখ সাধু আর ক্রোর দশেক ব্রাহ্মণ ঐ গরীবদের রক্ত চুষে খায়,আর তাদের উন্নতির কোনও চেষ্টা করে না,সে কি দেশ না নরক! সে ধর্ম,না পৈশাচ নৃত্য! দাদা,এটি তলিয়ে বোঝ—ভারতবর্ষ ঘুরে ঘুরে দেখেছি। এ দেশ দেখেছি। কারণ বিনা কার্য হয় কি? পাপ বিনা সাজা মিলে কি?"
"যে ধর্ম বা যে ঈশ্বর বিধবার অশ্রুমোচন করিতে পারে না অথবা অনাথ শিশুর মুখে একমুঠো খাবার দিতে পারে না,আমি সে ধর্মে বা সে ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না। যত উচ্চ মতবাদ হউক,যত সুবিন্যস্ত দার্শনিক তত্ত্বই উহাতে থাকুক,যতক্ষণ উহা মত বা পুস্তকেই আবদ্ধ,ততক্ষণ উহাকে আমি ধর্ম নাম দিই না। চক্ষু আমাদের পৃষ্ঠের দিকে নয়,সামনের দিকে-অতএব সম্মুখে অগ্রসর হও,আর যে ধর্মকে তোমরা নিজের ধর্ম বলিয়া গৌরব কর,তাহার উপদেশগুলিু কার্যে পরিণত কর-ঈশ্বর তোমাদিগের সাহায্য করুন।"
"একটি কথা—মহাপুরুষেরা বিশেষ শিক্ষা দিতে আসেন,নামের জন্যে নহে,কিন্তু চেলারা তাঁদের উপদেশ বানের জ্বলে ভাসাইয়া নামের জন্য মারামারি করে—এই তো পৃথিবীর ইতিহাস।"
"জীবনটা ক্ষণস্থায়ী স্বপ্নমাত্র,যৌবন ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়;দিবারাত্র বল,’তুমি আমার পিতা, মাতা, স্বামী, দয়িত, প্রভু, ঈশ্বর—আমি তোমা ছাড়া আর কিছু চাই না,আর কিছুই চাই না,আর কিছুই না। তুমি আমাতে, আমি তোমাতে—আমি তুমি,তুমি আমি।'ধন চলে যায়,সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যায়,জীবন দ্রুতগতিতে চলে যায়,শক্তি লোপ পেয়ে যায়,কিন্তু প্রভু চিরদিনই থাকেন—প্রেম চিরদিনই থাকে।"
"ইচ্ছা শক্তিই জগতকে পরিচালিত করিয়া থাকে।"
ঈশ্বরই তাঁহার সন্তানগণকে সমুদ্রগর্ভে রক্ষা করিয়া থাকেন!
"তোর দুয়ারে স্বয়ং নারায়ন কাঙ্গালবেশে এসে অনাহারে মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে রয়েছেন,তাঁকে না দিয়ে খালি নিজে ও নিজের স্ত্রী পুত্রদেরই নানাপ্রকার চর্ব-চূষ্য দিয়ে পূর্তি করা-সে তো পশুর কাজ।"
"আপানার ভাল কেবল পরের ভালয় হয়,আপনার মুক্তি এবং ভক্তিও পরের মুক্তি ও ভক্তিতে হয়—তাইতে লেগে যাও,মেতে যাও,উন্মাদ হয়ে যাও। ঠাকুর যেমন তোমাদের ভালবাসতেন,আমি যেমন তোমাদের ভালোবাসি,তোমারা তেমনি জগৎকে ভালবাস দেখি ।"
এস,মানুষ হও। নিজেদের সংকীর্ণ গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দেখ,সব জাতি কেমন উন্নতির পথে চলেছে। তোমরা কি মানুষকে ভালবাসো? তোমরা কি দেশকে ভালবাসো? তাহলে এস,আমরা ভাল হবার জন্য—উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি।
"ধৈর্য,পবিত্রতা ও অধ্যবসায়ের জয় হবে।"
"নিরাশ হইও না। স্মরণ রাখিও,ভগবান গীতায় বলিতেছেন,‘কর্মে তোমার অধিকার,ফলে নয়।'
"দৃঢ়ভাবে কার্য করিয়া যাও,অবিচলিত অধ্যবসায়শীল হও এবং প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখো।"
"ধীর,নিস্তব্ধ অথচ দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে। খবরের কাগজে হুজুক করা নয়। সর্বদা মনে রাখবে,নামযশ আমাদের উদ্দেশ্য নয়।"
"পবিত্রতা,সহিষ্ণুতা ও অধ্যবসায়—এই তিনটি,সর্বোপরি প্রেম সিদ্ধিলাভের জন্য একান্ত আবশ্যক।"
"ভগবান যদিও সর্বত্র আছে বটে,কিন্তু তাঁকে আমরা জানতে পারি কেবল মানবচরিত্রের মধ্য দিয়ে।"
"কারও ওপর হুকুম চালাবার চেষ্টা ক’রো না—যে অপরের সেবা করতে পারে,সেই যথার্থ সর্দার হ’তে পারে।"
"কার্যক্ষেত্রে অবতরণ কর। কুড়েমির কাজ নয়। ঈর্ষা অহমিকাভাব গঙ্গার জলে জন্মের মতো বিসর্জন দাও ও মহাবলে কাজে লাগিয়া যাও। বাকি প্রভু সব পথ দেখাইয়া দিবেন। মহা বন্যায় সমস্ত পৃথিবী ভাসিয়া যাইবে।"
"তুমি তোমার কাজ ক’রে যাও,আর মনে রেখো—‘ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিত দুর্গতিং তাত গচ্ছতি।"
দাদা,এ সব লিখিবার নহে,বলিবার নহে। আমার পত্র অন্য কেউ যেন না পড়ে,তোমরা ছাড়া। হাল ছেড় না,টিপে ধরে থেক—পাকড় ঠিক বটে,তাতে আর ভুল নাই—তবে পারে যাওয়া আজ আর কাল—এই মাত্র। দাদা, leader (নেতা) কি বানাতে পারা যায়?Leader জন্মায়। বুঝতে পারলে কিনা? লিডারি করা আবার বড় শক্ত—দিসস্য দাসঃ,হাজারো লোকের মন যোগানো। Jealousy, selfishness(ঈর্ষা,স্বার্থপরতা ) আদপে থাকবে না—তবে leader.প্রথম by birth (জন্মগত),দ্বিতীয় unselfish(নিঃস্বার্থ ),তবে leader. সব ঠিক হচ্ছে,সদ ঠিক আসবে,তিনি ঠিক জাল ফেলছেন,ঠিক জাল গুটাচ্ছেন—বয়মনুসরামঃ, বয়মনুসরামঃ, প্রীতিঃ পরমসাধনম্ বুঝলে কি না? Love conquers in the long run, দিক্ হলে চলবে না—wait, wait (অপেক্ষা কর,অপেক্ষা কর);সবুরে মেওয়া ফলবেই ফলবে। যোগেনের কথা কিছুই লেখ নাই। রাখাল-রাজা ঘুরে ফিরে পুনর্বৃন্দাবনং গচ্ছেদিতি।...
হে বীরহৃদয় যুবকগণ,তোমরা বিশ্বাস কর যে,তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জন্মেছ। কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাকে ভয় পেও না—এমন কি আকাশ থেকে প্রবল বজ্রাঘাত হলেও ভয় পেও না—খাড়া হয়ে ওঠ,ওঠ,কাজ কর।
হে ভ্রাতৃবৃন্দ,আমাদের সকলকেই এখন কঠোর পরিশ্রম করিতে হইবে,এখন ঘুমাইবার সময় নহে। আমাদের কার্যকলাপের উপরই ভারতের ভবিষ্যত নির্ভর করিতেছে ঐ দেখ,ভারতমাতা ধীরে ধীরে নয়ন উন্মীলন করিতেছেন। তিনি কিছুকাল নিদ্রিত ছিলেন মাত্র। উঠ,তাহাকে জাগাও—আর নূতন জাগরনে নূতন প্রাণে পূর্বাপেক্ষা অধিকতর গৌরবমণ্ডিতা করিয়া ভক্তিভাবে তাঁহাকে তাঁহার শাশ্বত সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত কর।
আমার ধারণা,বেদান্ত —কেবল বেদান্তই সার্বভৌম ধর্ম হইতে পারে,আর কোন ধর্মই নয়।
আমাদের বিশ্বাস—সব প্রাণীই ব্রহ্মস্বরূপ। প্রত্যেক আত্মাই যেন মেঘে ঢাকা সূর্যের মতো;একজনের সঙ্গে আর একজনের তফাত কেবল এই—কোথাও সূর্যের উপর মেঘের আবরণ ঘন,কোথাও এই আবরণ একটু পাতলা;আমাদের বিশ্বাস-জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ইহা সকল ধর্মেরই ভিত্তিস্বরূপ;আর শারীরিক,মানসিক বা আধ্যাত্মিক স্তরে মানবের উন্নতির সমগ্র ইতিহাসের সার কথাটাই এই-এক আত্মাই বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে আপনাকে প্রকাশ করছেন।
আমাদের দেশের শতকরা নব্বই জনই অশিক্ষিত,অথচ কে তাহাদের বিষয় চিন্তা করে?এইসকল বাবুর দল কিংবা তথাকথিত দেশহিতৈষীর দল কি?
আজকাল লোকে ‘যোগ্যতমের উদবর্তন'(Survival of the fittest)—রূপ নূতন মতবাদ লইয়া অনেক কথা বলিয়া থাকে। তাহারা মনে করে—যাহার গায়ের জোর যত বেশী,সেই তত অধিক দিন জীবিত থাকিবে। যদি তাহাই সত্য হইত,তবে প্রাচীনকালের যে-সকল জাতি কেবল অন্যান্য জাতির সহিত যুদ্ধ—বিগ্রহে কাটাইয়াছে,তাহারাই মহাগৌরবের সহিত আজও জীবিত থাকিত এবং এই হিন্দুজাতি,যাহারা অপর একটি জাতিকে জয় করে নাই,তাহারাই এতদিন বিনষ্ট হইয়া যাইত। জনৈকা ইংরেজ মহিলা আমাকে এক সময় বলেন,হিন্দুরা কি করিয়াছে? তাহারা কোন একটা জাতিকেও জয় করিতে পারে নাই! পরন্তু এই জাতি এখনও ত্রিশকোটি প্রাণী লইয়া সদর্পে জীবিত রহিয়াছে! আর ইহা সত্য নহে যে,উহার সমুদয় শক্তি নিঃশেষিত হইয়াছে;ইহাও কখনো সত্য নহে যে,এই জাতির শরীর পুষ্টির অভাবে ক্ষয় পাইতেছে। এই জাতির এখনও যথেষ্ট শক্তি রহিয়াছে। যখনই উপযুক্ত সময় আসে,যখনই প্রয়োজন হয়,তখনই এই জীবনীশক্তি মহাবন্যার মতো প্রবাহিত হইয়া থাকে।
ঈশ্বরের অন্বেষণে কোথায় যাইতেছ? দরিদ্র,দুঃখী,দুর্বল—সকলেই কি তোমার ঈশ্বর নহে? অগ্রে তাহাদের উপাসনা কর না কেন? গঙ্গাতীরে বাস করিয়া কূপ খনন করিতেছ কেন? প্রেমের সর্বশক্তিমত্তায় বিশ্বাস কর।
এই কথা মনে রেখো—দুটো চোখ,দুটো কান,কিন্তু একটা মুখ। উপেক্ষা উপেক্ষা,উপেক্ষা। ‘ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গাতিং তাত গচ্ছতি’।
এই জগতে ধনের সন্ধান করিতে গিয়া তোমাকেই শ্রেষ্ঠ রত্নরূপে পাইয়াছি;হে প্রভু,তোমারই নিকট আমি নিজেকে বলি দিলাম ।'‘ভালবাসার পাত্র খুঁজিতে গিয়া একমাত্র তোমাকেই ভালবাসার পাত্র পাইয়াছি। আমি তোমারই নিকট আমি নিজেকে বলি দিলাম’। (যজুর্বেদ সংহিতা )
সাধুতাই শ্রেষ্ঠ নীতি,এবং পরিণামে ধার্মিক লোকের জয় হইবেই। ...বংস,সর্বদা মনে রাখিও আমি যতই ব্যস্ত,যতই দূরে অথবা যত উচ্চপদস্থ লোকের সঙ্গেই থাকি না কেন, আমি সর্বদাই আমার বন্ধুবর্গের প্রত্যেকের, সর্বাপেক্ষা সামান্যপদস্থ ব্যক্তির জন্যও প্রার্থনা করিতেছি এবং তাহাকে স্মরণ রাখিতেছি।
সাবধান! আমাদের মধ্যে যাহাতে কিছুমাত্র অসত্য প্রবেশ না করে। সত্যকে ধরিয়া থাকো,আমার নিশ্চয় কৃতকার্য হইবে। হইতে পারে বিলম্বে,কিন্তু নিশ্চিত কৃতকার্য হইব,এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই। কাজ করিয়া যাও। মনে কর,আমি জীবিত নাই। এই মনে করিয়া কাজে লাগো যেন তোমাদের প্রত্যেকের উপর সমুদয় কাজের ভার। ভাবী পঞ্চাশ শতাব্দী তোমাদের দিকে চাহিয়া আছে। ভারতের ভবিষ্যৎ তোমাদের উপর নির্ভর করিতেছে। কাজ করিয়া যাও ।
কার্যসিদ্ধর জন্য আমার ছেলেদের আগুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। এখন কেবল কাজ,কাজ,কাজ-বছর কতক বাদে স্থির হয়ে কে কতদূর করলে মিলিয়ে তুলনা ক'রে দেখা যাবে। ধৈর্য'অধ্যবসায় ও পবিত্রতা চাই ।
কি কারণে হিন্দুজাতি তাহার অদ্ভুত বুদ্ধি এবং অন্যান্য গুণাবলী সত্ত্বেও ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হইয়া গেল? আমি বলি,হিংসা। এই দুর্ভাগা হিন্দুজাতি পরস্পরের প্রতি যেরূপ জঘন্যভাবে ঈর্ষান্বিত এবং পরস্পরের যশখ্যাতিতে যেভাবে হিংসাপরায়ণ,তাহা কোন কালে কোথাও দেখা যায় নাই।
আমার লক্ষ্য কেবল ভেতরের আত্মতত্ত্বের দিকে;সেইটি যদি ঠিক হয়ে যায়,তবে আর সবই ঠিক হয়ে যাবে—এই আমার মত।
আমি চাই,যেন আমাদের মধ্যে কোনরূপ কপটতা,কোনরূপ লুকোচুরি ভাব,কোনরূপ দুষ্টামি না থাকে। আমি বরাবরই প্রভুর উপর নির্ভর করিয়াছি,দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল সত্যের উপর নির্ভর করিয়াছি। আমার বিবেকের উপর এই কলঙ্ক লইয়া যেন মরিতে না হয় যে,আমি নামের জন্য,এমন কি,পরের উপকার করিবার জন্য লোকোচুরি খেলিয়াছি। এক বিন্দু দুর্নীতি,বদ মতলবের একবিন্দু দাগ পর্যন্ত যেন না থাকে ।
কাজ চিরকালই ধীরে ধীরে হয়ে এসেছে,চিরকালই ধীরে হবে;এখন ফলাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ ক'রে শুধু কাজ করেই খুশী থাকো; সর্বোপরি,পবিত্র ও দৃঢ়-চিত্ত হও এবং মনে প্রাণে অকপট হও—ভাবের ঘরে যেন এতটুকু চুরি না থাকে,তা হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
পাহাড় যদি মহম্মদের নিকট না যায়,মহম্মদ পাহাড়ের নিকট যাবেন। অর্থাৎ গরীবের ছেলেরা যদি স্কুলে লেখাপড়া শিখতে না পারে,বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের শিখাতে হবে।
পূর্ণত্বলাভের পথ এই যে,নিজে ঐরূপ চেষ্টা করতে হবে এবং অন্যান্য স্ত্রী-পুরুষ যারা সচেষ্ট তাদের যথাশক্তি সাহায্য করতে হবে।
প্রত্যেক দাসজাতির মূল পাপ হচ্ছে ঈর্ষা। আবার এই ঈর্ষা দ্বেষ ও সহযোগিতার অভাবই এই দাসত্বকে চিরস্থায়ী ক'রে রাখে। ভারতের বাইরে না এলে আমার এ মন্তব্যের মর্ম বুঝবে না।
প্রত্যেকের আদর্শ ভিন্ন ভিন্ন। ভারতের আদর্শ ধর্মমুখী বা অন্তর্মুখী,পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক বা বহির্মুখী। পাশ্চাত্য এতটুকু আধ্যাত্মিক উন্নতিও সমাজের উন্নতির ভিতর দিয়া করিতে চায়,আর প্রাচ্য এতটুকু সামাজিক শক্তিও আধ্যাত্মিকতার মধ্যে দিয়া লাভ করিতে চায়।
ভায়া,সব যায়,ওই পোড়া হিংসেটা যায় না। আমাদের ভিতরও খুব আছে। আমাদের জাতের ঐটে দোষ,খালি পরনিন্দা আর পরশ্রীকাতরতা। হাম্বড়া,আর কেউ বড় হবে না।
ভায়া,শক্তি বিনা জগতের উদ্ধার হবে না। আমাদের দেশ সকলের অধম কেন,শক্তিহীন কেন?—শক্তির অবমাননা সেখানে ব’লে।
মন যখন জীবনের উচ্চতম তত্ত্বগুলি সম্বন্ধে চিন্তা করিতে অসমর্থ হয়,তখন ইহা মস্তিস্কের দুর্বলতার নিশ্চিত লক্ষণ বলিয়া জানিতে হইবে।
বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়'নিঃস্বার্থভাবে ভক্তিপূর্ণহৃদয়ে এই সকল প্রশ্নের মীমাংসার জন্য 'উদ্বোধন'সহৃদয় প্রেমিক বুধমণ্ডলীকে আহ্বান করিতেছে এবং দ্বেষ-বুদ্ধিবিরহিত ও ব্যক্তিগত বা সমাজগত বা সম্প্রদায়গত কুবাক্যপ্রয়োগে বিমুখ হইয়া সকল সম্প্রদায়ের সেবার জন্যই আপনার শরীর অর্পণ করিতেছে।
কার্যে আমাদের অধিকার,ফল প্রভুর হস্তে;আমরা কেবল বলি—হে ওজঃস্বরূপ আমাদিগকে ওজস্বী কর;হে বীর্যস্বরূপ! আমাদিগকে বীর্যবান কর;হে বলস্বরূপ! আমাদিগকে বলবান কর ।
জগতের ইতিহাস হইল –পবিত্র,গম্ভীর,চরিত্রবান্ এবং শ্রদ্ধাসম্পন্ন কয়েকশ মানুষের ইতিহাস। আমাদের তিনটি বস্তুর প্রয়োজন – অনুভব করিবার হৃদয়,ধরণা করিবার মস্তষ্ক এবং কাজ করিবার হাত।
প্রিয় বাছারা,পিতামাতার চেয়েও তিনি তোমাদের নিকটতর। তোমরা ফুলের মতো পবিত্র ও নির্মল। সেভাবেই থাকো। তাহলেই তিনি নিজেকে প্রকাশ করবেন তোমাদের কাছে।
প্রিয় বৎস! জানিবে,কোন বড় কাজই গুরুতর পরিশ্রম ও কষ্টস্বীকার ব্যতীত হয় নাই।
প্রেমই জীবন—উহাই জীবনের একমাত্র গতিনিয়ামক;স্বার্থপরতাই মৃত্যু,জীবন থাকিতেও ইহা মৃত্যু,আর দেহাবসানেও এই স্বার্থপরতাই প্রকৃত মৃত্যুস্বরূপ।
মানুষ যত প্রকার জ্ঞানলাভ করিয়াছে,সবই মন হইতে। জগতের অনন্ত পুস্তকাগার তোমারই মনে। বহির্জগৎ কেবল তোমার নিজ মনকে অধ্যয়ন করিবার উত্তেজক কারণ-উপলক্ষ্য মাত্র।
মেয়ে-মদ্দ দুই চাই,আত্মাতে মেয়েপুরুষের ভেদ নাই। তাঁকে অবতার বললেই হয় না-শক্তি বাকাশ চাই। হাজার হাজার পুরুষ চাই,স্ত্রী চাই—যারা আগুনের মতো হিমাচল থেকে কন্যাকুমারী—উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু,দুনিয়াময় ছড়িয়ে পড়বে। ছেলেখেলার কাজ নেই—ছেলেখেলার সময় নেই—যারা ছেলেখেলা করতে চায়,তফাত হও এই বেলা;নইলে মহা আপদ তাদের। Organization (সংঘ) চাই—কুড়েমি দূর ক’রে দাও,ছড়াও,ছড়াও;আগুনের মতো যাও সব জায়গায়। আমার উপর ভরসা রেখো না,আমি মরি বাঁচি,তোমরা ছড়াও,ছড়াও।
যে সন্ন্যাসীর অন্তরে অপরের কল্যাণ-সাধন-স্পৃহা বর্তমান নাই,সে সন্ন্যাসীই নহে—সে তো পশুমাত্র!
যেখানে কোন বোধ চেতনা বা অনুভূতি আছে,সেখানে শব্দ নিশ্চয়ই আছে।
শতকরা নব্বই জন নরপশুই মৃত,প্রেততুল্য;কারণ হে যুবকবৃন্দ,যাহার হৃদয়ে প্রেম নাই,সে মৃত ছাড়া আর কি?
সমগ্র জগতের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখতে পাবে,মহাপুরুষগণ চিরকাল বড় বড় স্বার্থত্যাগ করেছেন,আর সাধারণ লোক তার সুফল ভোগ করেছে।
সহিষ্ণুতা অবলম্বন কর এবং কাজ করিয়া যাও। ‘উদ্ধরেদাত্মনাত্মানম্'।
স্বাধীনতাই উন্নতির প্রথম শর্ত। যেমন মানুষের চিন্তা করিবার ও কথা বলিবার স্বাধীনতা থাকা আবশ্যক,তেমনি তাহার আহার পোশাক বিবাহ ও অন্যান্য সকল বিষয়েই স্বাধীনতা প্রয়োজন—তবে এই স্বাধীনতা। যেন অপর কাহারও অনিষ্ঠ না করে।
হামবড়া বা দলাদলি বা ঈর্ষা একেবারে জন্মের মতো বিদায় করিতে হইবে। পৃথিবীর ন্যায় সর্বংসহ হইতে হইবে;এইটি যদি পারো,দুনিয়া তোমাদের পায়ের তলায় আসিবে।
হে বৎস,যথার্থ ভালবাসা কখনও বিফল হয় না। আজই হউক,কালই হউক,শত শত যুগ পরেই হউক,সত্যের জয় হইবেই, প্রেমের জয় হইবেই।
তোমরা যদি আমার সন্তান হও,তবে তোমার কিছুই ভয় করবে না,কিছুতেই তোমাদের গতিরোধ করতে পারবে না। তোমারা সিংহতুল্য হবে। ভারতকে—সমগ্র জগৎকে জাগাতে হবে। এ না করলে চলবে না,কাপুরুষতা চলবে না—বুঝলে? মৃত্যু পর্যন্ত অবিচলিতভাবে লেগে পড়ে থেকে আমি যেমন দেখাচ্ছি,ক’রে যেতে হবে—তবে তোমার সিদ্ধি নিশ্চিত ।
ভগবানে বিশ্বাস রাখো। কোন চালাকির প্রয়োজন নাই;চালাকি দ্বারা কিছুই হয় না।
যদি তুমি পবিত্র হও,যদি তুমি বলবান্ হও,তাহা হইলে তুমি একাই সমগ্র জগতের সমকক্ষ হইতে পারিবে।
যে অপরকে স্বাধীনতা দিতে প্রস্তুত নয়,সে কোনমতেই স্বাধীনতা পাইবার যোগ্য নহে। দাসেরা শক্তি চায় অপরকে দাস করিয়া রাখিবার জন্য।
অলৌকিক ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করতে পারলেই তো আর ধর্মের সত্যতা প্রমাণিত হয় না—জড়ের দ্বারা তো আর চৈতন্যের প্রমাণ হয় না। ঈশ্বর বা আত্মার অস্তিত্ব বা অমরত্বের সঙ্গে অলৌকিক ক্রিয়ার কি সম্বন্ধ?
আপনারা ঈশ্বরকে উপাসনা করার জন্য হয়তো একটি মূর্তির অবতারণা করতে পারেন । কিন্তু জেনে রাখুন,তাঁহাকে উপাসনা করার জন্য এর চেয়ে ভাল মূর্তি যা আগে থেকেই রয়েছে,তা হল জীবন্ত মানুষ ।
এই জগতে একজন ঈশ্বর আছেন। ইহা সত্য নয় যে, জগৎ স্রোতে ভাসিয়া চলিয়াছে এবং তোমার বা আমার সাহায্যের অপেক্ষায় রহিয়াছে। ঈশ্বর জগতে সর্বদাই বর্তমান। তিনি অবিনাশী,নিয়ত-ক্রিয়াশীল। জীবনে-মরণে,সুখে-দুঃখে-সকল অবস্থাতেই সমুদয় জগৎ ঈশ্বরপূর্ণঃ কেবল নয়ন উন্মীলন করিয়া তাঁহাকে দর্শন কর।
পরোপকারই ধর্ম,পরপীড়নই পাপ। শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম,দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ। অপরকে ভালোবাসাই ধর্ম, অপরকে ঘৃণা করাই পাপ। ঈশ্বর ও নিজ আত্মাতে বিশ্বাসই ধর্ম,সন্দেহই পাপ।
আদান-প্রদানই প্রকৃতির নিয়ম;ভারতের যদি আবার উঠিতে হয়,তবে তাহাকে নিজ ঐশ্বর্য-ভান্ডার উন্মুক্ত করিয়া পৃথিবীর সমুদয় জাতির ভিতর ছড়াইয়া দিতে হইবে এবং পরিবর্তে অপরে যাহা কিছু দেয়,তাহাই গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে ।
আমাদিগকে বড়বড় কাজ করিতে হইবে,অদ্ভুত শক্তির বিকাশ দেখাইতে হইবে,অপর জাতিকে অনেক বিষয় শিখাইতে হইবে। দর্শন ধর্ম বা নীতিবিজ্ঞানই বলুন অথবা মধুরতা কোমলতা বা মানবজাতির প্রতি অকপট প্রীতিরূপ সদ্গুনরাজিই বলুন, আমাদের মাতৃভূমি এ-সব কিছুরই প্রসূতি। এখনও ভারতে এইগুলি বিদ্যমান আছে আর পৃথিবী সম্বন্ধে যতটুকু অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছি, তাহাতে আমি এখন দৃঢ়ভাবে সাহসের সহিত বলিতে পারি,এখনও ভারত এই সকল বিষয়ে পৃথিবীর অন্যান্য জাতি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এই আশ্চর্য ব্যাপারটি লক্ষ্য করিয়া দেখুন।
আমাদের জাতীয় জীবন অতীতকালে মহৎ ছিল,তাহাতে সন্দেহ নাই,কিন্তু আমি অকপটভাবে বিশ্বাস করি যে,আমাদের ভবিষ্যত আরও গৌরবান্বিত।
আমাদের দেশের লোকের না আছে ভাব,না আছে সমাদর করিবার ক্ষমতা। পরন্তু সহস্র বৎসরের পরাধীনতার ফলে উৎকট পরশ্রীকাতরতা ও সন্দিগ্ধ প্রকৃতির বশে ইহারা যে-কোন নূতন ভাবধারারই বিরোধী হইয়া উঠে।
আমাদের মতো কূপমণ্ডক তো দুনিয়ায় নাই। কোন একটা নূতন জিনিস কোন দেশ থেকে আসুক দিকি,আমেরিকা সকলের আগে নেবে। আর আমরা? ‘আমাদের মতো দুনিয়ায় কেউ নেই,‘আর্য'বংশ!!!'কোথায় বংশ তা জানি না!...এক লাখ লোকের দাবানিতে ৩০০ মিলিয়ান (ত্রিশ কোটি) কুকুরের মত ঘোরে,আর তারা 'আর্যবংশ'!!!
একটা পুরানো গল্প শোন। একটা লোক রাস্তা চলতে চলতে একটা বুড়োকে তার দরজার গোড়ায় বসে থাকতে দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে—‘ভাই,অমুক গ্রামটা এখান থেকে কতদূর? ‘বুড়োটা কোন জবাব দিলে না। তখন পথিক বার বার জিজ্ঞাসা করেত লাগলো,কিক্ত বুড়ো তবু চুপ ক’রে রইল। পথিক তখন বিরক্ত হয়ে আবার রাস্তায় গিয়ে চলবার উদ্যেগ করলে। তখন বুড়ো দাঁড়িয়ে উঠে পথিককে সম্বোধন ক’রে বললে,‘আপনি অমুক গ্রামটার কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন—সেটা এই মাইল-খানেক হবে।'তখন পথিক তাকে বললে,’তোমাকে এই একটু আগে কতবার ধরে জিজ্ঞাসা করলাম,তখন তো তুমি একটা কথাও কইলে না—এখন যে ব'লছ,ব্যাপারখানা কি ?'তখন বুড়ো বললে,’ঠিক কথা। কিন্তু প্রথম যখন জিজ্ঞাসা করছিলেন,তখন চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলেন,আপনার যে যাবার ইচ্ছে আছে,ভাব দেখে তা বোধ হচ্ছিল না—এখন হাঁটতে আরম্ভ করেছেন,তাই আপনাকে বললাম।'
হে বৎস,এই গল্পটা মনে রেখো। কাজ আরম্ভ ক’রে দাও,বাকি সব আপনা-আপনি হয়ে যাবে।
এদেশে (আমেরিকা) কেহ যদি উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে থাকে তবে সকলের তাহার সহায়তা করিতে প্রস্তুত। আর ভারতবর্ষে কাল যদি কোন একটি পএিকায় আপনি আমার প্রশংসা করিয়া এক ছাত্র লেখেন,তবে পরদিন দেশসুদ্ধ সকলে আমার বিপক্ষে দাঁড়াইবে । ইহার হেতু কি ? হেতু-দাসসুলভ মনোবৃত্তি । নিজেদের মধ্যে কেহ সাধারণ স্তর হইতে একটু মাথা উঁচু করিয়া দাঁড়াইবে,ইহা তাহাদের পক্ষে অসহ্য ।
আমরা মানব জাতিকে সেই স্থানে লইয়া যাইতে চাই;যেখানে বেদ বাইবেল কোরআন নাই;অথচ বেদ বাইবেল কোরআন সমন্বয়ে গঠিত।
মানুষ যত প্রকার জ্ঞানলাভ করিয়াছে,সবই মন হইতে। জগতের অনন্ত পুস্তকাগার তোমারই মনে। বহির্জগৎ কেবল তোমার নিজ মনকে অধ্যয়ন করিবার উত্তেজক কারণ-উপলক্ষ্য মাত্র।
চরিত্র গঠনের জন্য ধীর ও অবিচলিত যত্ন,এবং সত্যোপব্ধির জন্য তীব্র প্রচেষ্টাই কেবল মানব জাতির ভবিষৎ জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করিতে পারে।
নিজেদের বিপদ থেকে টেনে তোলো! তোমার উদ্ধার-সাধন তোমাকেই করতে হবে।...ভীত হয়ো না। বারবার বিফল হয়েছো বলো নিরাশ হয়ো না। কাল সীমাহীন,অগ্রসর হতে থাকো,বারবার তোমার শক্তি প্রকাশ করতে থাকো,আলোক আসবেই।
দর্শনবর্জিত ধর্ম কুসংস্কারে গিয়ে দাঁড়ায়,আবার ধর্মবর্জিত দর্শন শুধু নাস্তিকতায় পরিণত হয়। আমাদের নিম্নশ্রেণীর জন্য কর্তব্য এই,কেবল তাহাদিগকে শিক্ষা দেওয়া এবং তাহাদের বিনষ্টপ্রায় ব্যক্তিত্ববোধ জাগাইয়া তোলা।
অসংযত ও উচ্ছৃঙ্খল মন আামাদের নিয়ত নিম্ন থেকে নিম্নতর স্তরে নিয়ে যাবে এবং চরমে আমাদের বিধ্বস্ত করবে,ধ্বংস করবে। আর সংযত ও সুনিয়ন্ত্রিত মন আমাদের রক্ষা করবে,মুক্তিদান করবে।
মানুষ মূর্খের মত মনে করে,স্বার্থপর উপায়ে সে নিজেকে সুখী করিতে পারে। বহুকাল চেষ্টার পর অবশেষে বুঝিতে পারে-প্রকৃত সুখ স্বার্থরতার নাশে এবং সে নিজে ব্যতীত অপর কেহই তাহাকে সুখী করিতে পারে না।
আপানার ভাল কেবল পরের ভালয় হয়,আপনার মুক্তি এবং ভক্তিও পরের মুক্তি ও ভক্তিতে হয় -তাইতে লেগে যাও,মেতে যাও,উন্মাদ হয়ে যাও। ঠাকুর যেমন তোমাদের ভালোবাসতেন,আমি যেমন তোমাদের ভালোবাসি,তোমারা তেমনি জগৎকে ভালোবাস দেখি।
মনে করিও না,তোমরা দরিদ্র। অর্থই বল নহে;সাধুতাই-পবিত্রতাই বল। আসিয়া দেখ,সমগ্র জগতে ইহাই প্রকৃত বল কি না।
যদি শাসন করতে চাও,সকলের গোলাম হয়ে যাও। এই হ’ল আসল রহস্য। কথাগুলি রুক্ষ হলেও ভালবাসায় ফল হবেই। যে-কোন ভাষার আবরণেই থাকুক না কেন,ভালবাসা মানুষ আপনা হতেই বুঝতে পারে ।
যতদিন তোমরা পরস্পরের উপর ভেদবুদ্ধি না করিবে,ততদিন প্রভুর কৃপায়'রণে বনে র্পবত-মস্তকে বা'তোমাদের কোনও ভয় নাই। ‘শ্রেয়াংসি বহুবিঘ্নানি’,ইহা তো হইবেই। অতি গম্ভীর বুদ্ধি ধারণ কর। বালবুদ্ধি জীবে কে বা কি বলিতেছে,তাহার খবরমাত্রও লইবে না । উপেক্ষা,উপেক্ষা,উপেক্ষা ইতি।
যদি ভাল চাও তো ঘণ্টাফণ্টাগুলোকে গঙ্গার জলে সঁপে দিয়ে সাক্ষাৎ ভগবান নর-নারায়ণের—মানবদেহধারী হরেক মানুষের পূজো করগে—বিরাট আর স্বরাট। বিরাট রূপ এই জগৎ,তার পূজো মানে তার সেবা—এর নাম কর্ম;ঘণ্টার উপর চামর চড়ানো নয়,আর ভাতের থালা সামনে ধরে দশ মিনিট ব’সব কি আধ ঘণ্টা ব’সব—এ বিচারের নাম ‘কর্ম নয়,ওর নাম পাগলা-গারদ। ক্রোর টাকা খরচ ক’রে কাশী বৃন্দাবনের ঠাকুরঘরের দরজা খুলছে আর পড়ছে। এই ঠাকুর কাপড় ছাড়ছেন, তো এই ঠাকুর ভাত খাচ্ছেন,তো এই ঠাকুর আঁটকুড়ির বেটাদের গুষ্টির পিণ্ডি করছেন;এদিকে জ্যান্ত ঠাকুর অন্ন বিনা,বিদ্যা বিনা,মরে যাচ্ছে। বোম্বায়ের বেনেগুলো ছারপোকার হাসপাতাল বানাচ্ছে—মানুষগুলো মরে যাক। তোমাদের বুদ্ধি নাই যে, এ কথা বুঝিস—আমাদের দেশের মহা ব্যারাম—পাগলা-গারদ দেশ-ময়।....
" একদিনে বা একবছরে সফলতার আশা করো না, সবসময় শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে রাখাে।”
"পবিত্র ও নিঃস্বার্থ হতে চেষ্টা কর তার মধ্যেই রয়েছে সমস্ত ধর্ম। "
" মনের শক্তি সূর্যের কিরণের মত যখন এটি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয় তখনই এটি চকচক করে ওঠে "
" কখনও বড় পরিকল্পনার হিসাব করো না, ধীরে ধীরে আগে শুরু করাে, তােমার ভূমি নির্মাণ করাে তারপর ধীরে ধীরে তোমার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাও ”
" যদি কোনোদিন আপনার চলার পথে কোনো সমস্যা না আসে, তাহলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনি ভুল পথে হাঁটছেন "
“যা কিছু আপনাকে শারীরিক, বৌদ্ধিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল করে তোলে সেটাকে বিষ ভেবে প্রত্যাখ্যান করুন”
" আমাদের জীবন আমাদের চিন্তার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাই সর্বদা জীবনে ভালাে চিন্তা করা দরকার "
“সফলতা এবং ব্যর্থতা দুজনেই আমাদের জীবনের অংশ কিন্তু কেউই চিরস্থায়ী নয়।”
" মানুষ জ্ঞানের পরিচয় দেয় তার কথায়, যোগ্যতার পরিচয় দেয় তার কর্মে, আর বংশের পরিচয় দেয় তার ব্যবহারে।”
" তুমি যা চিন্তা করবে, তাই হয়ে যাবে। যদি তুমি নিজেকে দুর্বল ভাবো, তবে দুর্বল হবে। তেজস্বী ভাবলে তেজস্বী হবে।”
" একাকীত্ব তোমায় যা শেখাবে পৃথিবী কোন ভালো বই তোমায় তা শেখাতে পারবে না।”
" তুমি যদি সঠিক হও তাহলে তা প্রমান করার চেষ্টা করো না। চুপচাপ অপেক্ষা করো সময় সবকিছুর জবাব দিয়ে যাবে।”
“ধর্ম মানে শুধু মতবাদ নয়, ধর্ম মানে সাধনা। সৎ হওয়া আর সৎ কর্ম করা – এই দুয়ের মধ্যেই সমগ্র ধর্ম।”
“আমরা সেই শিক্ষা চাই যার দ্বারা চরিত্র গঠিত হয়, মনের জোর বাড়ে ও বুদ্ধি বিকশিত হয়।”
“তোমাকে ভিতর থেকে বাড়তে হবে তোমাকে কেউ ততক্ষণ শিক্ষিত করতে পারবে না যতক্ষণ না তুমি নিজ থেকে চেষ্টা করছো। মনে রাখবে আপনার নিজের আত্মা থেকে কোনও বড়ো শিক্ষক আর নেই।"
" চারাগাছকে যেমন জোর করে বাড়ানো যায় না, শিশুকেও তেমনি চেষ্টা করে শিক্ষা দেওয়া যায় না। চারাগাছটি স্বভাব অনুসারে বর্ধিত হয়। শিশু নিজেই শিক্ষা লাভ করে। "
"শিক্ষক চরিত্রের অপাপবিদ্ধতা, চিত্তশুদ্ধি, নির্লোভতা, শাস্ত্রের যথার্থ মমার্থ জ্ঞান, প্রেমপরতা অত্যাবশ্যক।”
" খারাপ চিন্তা ও খারাপ কর্ম তোমায় পতনের দিকে নিয়ে যাবে। অপরদিকে তোমার ভালো চিন্তা ও ভালো কর্ম দেবদূতের মতো তোমায় অনন্তকাল রক্ষা করবে। "
"যে ক্ষমতাশালী হওয়ার সাথে সাথে চিন্তাবিদ হয়। যে গতানুগতিকতা থেকে সকলকে মুক্ত করে নতুন দিশা দেখায়, সেই একমাত্র যুবক।”
“মনের মতো কাজ পেলে অতি মূর্খও করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মতো করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান। কোনো কাজই ছোট নয়।”
“যেসব ব্যাক্তি নিজের সুখ চিন্তায় একরকম উদাসীন তাঁরাই জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মী হয়েছেন।”
“সত্যের জন্য সবকিছুকে ত্যাগ করা চলে, কিন্তু কোনােকিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা চলে না।”
" উপরে উঠতে হলে সবার আগে নিজেকে হাল্কা কর নিজের মধ্যের সব অহঙ্কারকে টেনে বের করে দাও "
" একটি সময়ে একটি কাজ করাে এবং সেটা করার সময় নিজের সবকিছুই তার মধ্যে ব্যয় করে দেও।”
" ভাগ্য বলে কিছু নেই, – যা আছে তা হল শুধুমাত্র কর্মের ফল যা প্রত্যেকের চেষ্টা ও যত্নের ফলে গড়ে ওঠে। "
“জগৎ সংসার কি ভাবছে, সে দিকে তােমার চিন্তা করার কিছুই নেই দুনিয়াকে ভাবতে দাও কিন্তু তুমি তােমার কার্যে অবিচল থাকো।”
“যখন আপনি ব্যস্ত থাকেন তখন সব কিছুই সহজ বলে মনে হয় কিন্তু অলস হলে কোনো কিছুই সহজ বলে মনে হয়না”
" বিশ্বাসঘাতককে গালাগালি না দিয়ে ধন্যবাদ বলুন , কারণ সে তোমাকে মানুষ চিনতে শিখিয়েছে।”
" তর্কের চেয়ে নিরবতা ভালো , প্রতিশোধ নেওয়ার চেয়ে রাস্তা বদলে ফেলা ভালো , আর সার্থপর লোকের পাশে , চলার চেয়ে একলা চলা ভালো . "
" ত্যাগ ব্যতীত কিছুই হইতে পারে না। অন্যকে যদি সাহায্য করিতে চাও, তবে তোমার নিজের অহং কে বিসর্জন দিতে হইবে।”
“মনে করিও না, তোমরা দরিদ্র। অর্থই বল নহে… সাধুতাই-পবিত্রতাই বল। আপনাতে বিশ্বাস রাখো। প্রবল বিশ্বাসই বড় কাজের জনক।”
“গোলামীর উপর যে সম্পর্কটা দাঁড়িয়ে আছে, সেটা আবার কখনও ভালো হতে পারে? যেখানে মেয়েদের স্বাধীনতা নেই, সে জাত কখনো উন্নতি করতে পারে না।”
" সেই নারীও ধন্য যার চোখে পুরুষ ভগবানের পিতৃভাবের প্রতীক।
"সমস্ত সমস্যার একটি সমাধান আছে এবং সেটি হল কর্ম।"
"আপনি যদি সর্বদা আপনার হৃদয় দিয়ে সেবা করেন, তবে আপনার দৃঢ় বিশ্বাসের মাধ্যমে সমস্ত কাজ সম্ভব করতে পারবেন।"
"সমস্যা হল সে নতুন চ্যালেঞ্জ যা আপনাকে সফল হওয়ার সুযোগ দেয়।"
কর্ম হল মানুষ জীবনের উদ্দেশ্য। কর্ম একটি পূজা এবং একটি জ্ঞান। কর্ম দ্বারা তোমার চরিত্র গঠন করা হয়।
যদি তুমি কোনো কিছু জানতে চাও, তবে তা সম্পর্কে কর্ম কর।
"একটি শক্তিশালী মানুষ হল সে যিনি নিজের আত্মা জয় করেছেন।"
"জীবনে সফলতা লাভ করার জন্য আপনাকে আপনার স্বপ্ন বোঝার জন্য এবং সেটি পূর্ণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।"
"আপনি কি জানেন সে মানুষ সর্বদা জয়ী হয় যে তার মন শুধু আশা আশা না করে কঠোর পরিশ্রম করে।"
"শিক্ষার জন্য সময় নষ্ট না করে, আপনি শিক্ষার মাধ্যমে আপনার জীবন উন্নয়ন করতে পারেন।"
"শিক্ষার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারি এবং একটি উন্নয়নশীল সমাজ গড়তে পারি।"
"শিক্ষার মাধ্যমে আমরা স্বয়ংক্রিয় হতে পারি এবং আমাদের দেশ উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে পারে।"
"সত্যি কারের শিক্ষা সমস্ত দুশ্চরিত্র এবং অজ্ঞানকে ধ্বংস করে।"
"শিক্ষা হল সমস্ত জ্ঞানের মূল এবং এটি জীবন উন্নয়নের সমস্ত উপায় প্রদান করে।"
"শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে একটি দেশ শক্তিহীন হয়ে যায়।"
"প্রেম একটি অদ্ভুত জ্বলন্ত আলো, যা সমস্ত আবেগ, সমস্ত নেত্রতা এবং সমস্ত বিপদ ধ্বংস করে।"
"প্রেম হল আনন্দ যা মানুষকে মুক্তি দেয়।"
"সবাইকে ভালোবাসো, সকল কে সমানভাবে।
"ভালোবাসা একটি উন্নয়নের পথ। যদি আপনি ভালোবাসতে চান তবে প্রথমে নিজেকে উন্নয়ন করুন। এবং এরপর আপনার প্রতি করুন আর অপরের জীবনকে উন্নয়ন করুন।"
"ভালোবাসা প্রেমের একটি রূপ। এটি নিঃসঙ্গ হয় কারণ এটি সেই সমস্ত জীবন সম্পর্কে বিবেচনা করে না যা আমরা চাই।"
"ভালোবাসা মানুষকে তার জীবনের অর্থ উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। এটি একটি শক্তিশালী উপহার যা অমর হয়।"
"ভালোবাসা একটি বিশাল শক্তি যা মানুষকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যায়। এটি আপনাকে আপনার জীবনের সমস্ত কাজে সাহায্য করে এবং আপনাকে একটি শান্ত মনের উপহার দেয়।"
"ভালোবাসা মানুষকে একটি নতুন দিকে নিয়ে যায়। এটি মানুষকে তার সীমানা ছাড়াই উন্নয়ন করে দেয়।"
"ভালোবাসা মানুষের হৃদয়ের দুর্বলতাকে দূর করে এবং শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।"
"ভালোবাসা মানুষকে আনন্দ এবং উন্নয়ন দেয়। এটি মানুষকে তার সমস্ত কাজ করার শক্তি দেয় এবং সেটি নিজের উন্নয়নের পথে উন্নয়ন করে দেয়।"
“সমস্ত প্রেমই প্রসার, সমস্ত স্বার্থপরতাই সংকোচন। তাই প্রেমই জীবনের একমাত্র নিয়ম। যে ভালোবাসে সে বাঁচে, যে স্বার্থপর সে মরছে। তাই ভালবাসার জন্য ভালবাসা, কারণ এটি জীবনের নিয়ম, যেমন আপনি বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস নেন।"
"পৃথিবীতে বা স্বর্গের সমস্ত ভোগের বাসনা ত্যাগ কর। ইন্দ্রিয়ের অঙ্গগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করুন এবং মনকে নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি যে দুঃখী তা জেনেও সমস্ত দুঃখ সহ্য করুন। আধ্যাত্মিক স্বাধীনতা ছাড়া আর কিছুই ভাববেন না।"
"আমরা যত বেশি প্রেম, সদগুণ এবং পবিত্রতায় বৃদ্ধি পাই, ততই আমরা বাইরে প্রেম, গুণ এবং পবিত্রতা দেখি।"
"সমগ্র মানব জাতির জন্য ভালবাসা এবং দাতব্য, এটাই প্রকৃত ধর্মীয়তার পরীক্ষা।"
"বিশুদ্ধতা, ধৈর্য এবং অধ্যবসায় সাফল্যের জন্য তিনটি অপরিহার্য এবং সর্বোপরি ভালবাসা।"
ধর্ম সম্পর্কে
“ভয় হল মৃত্যু, ভয় হল পাপ, ভয় হল নরক, ভয় হল অধর্ম এবং ভয় হল ভুল জীবন। পৃথিবীর সমস্ত নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি এই ভয়ের অশুভ আত্মা থেকে এগিয়েছে।"
"আমাদের অন্তরে এবং প্রতিটি জীবের মধ্যে যদি আমরা ঈশ্বরকে দেখতে না পাই, তাহলে আমরা কোথায় ঈশ্বরকে খুঁজে পাব।"
"সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের প্রকৃতির প্রতি সত্য হওয়া। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।”
"ধর্ম মানুষকে সত্যের দিকে নিয়ে যায়।"
"যে ধর্মটি জীবন বদলাতে পারে না, সেটি কোনও কাজে আসে না।"
"সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের প্রকৃতির প্রতি সত্য হওয়া। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন!"
"ধর্ম হল একটি নিশ্চিত সাধারণ বোধ যা মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার সাথে যুক্ত করে এবং তাকে উন্নয়ন করে।"
"যে ধর্ম মানুষকে পবিত্র করে না বরং তাকে একটি কমিউনিটি হিসাবে বিভক্ত করে, সে ধর্মটি আসলে ধর্ম নয়।"
"ধর্ম যা আমরা সবসময় অনুসরণ করি সেটি আমাদের ধর্ম নয়। আমাদের ধর্ম হল আমাদের নিজেদের স্বত্বস্থাপন।"
"ধর্মের মূল উদ্দেশ্য হল মানব উন্নয়ন এবং শান্তির সৃষ্টি।"
"যখন আপনি প্রথম বার কিছু শিখতে শুরু করেন তখন আপনি অনেক কিছু মিস করতে পারেন কিন্তু যখন আপনি আপনার গুরুকে বুঝতে শুরু করেন আপনি পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারবেন।"
"একটি ভালো ধর্ম হল একটি সম্পূর্ণ জীবনযাপন।"
“আমাদের প্রথম কর্তব্য নিজেদেরকে ঘৃণা করা নয়, কারণ এগিয়ে যেতে হলে আগে নিজের উপর এবং তারপর ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখতে হবে। যাদের নিজের প্রতি বিশ্বাস নেই তারা কখনই ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখতে পারে না।”
“যে মুহুর্তে আমি প্রতিটি মানুষের দেহের মন্দিরে বসে ভগবানকে উপলব্ধি করেছি, যে মুহুর্তে আমি প্রতিটি মানুষের সামনে শ্রদ্ধার সাথে দাঁড়িয়ে তাঁর মধ্যে ভগবানকে দেখতে পাচ্ছি – সেই মুহুর্তে আমি বন্ধন থেকে মুক্ত, যা কিছু বাঁধে তা বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং আমি মুক্ত। "
"মানুষ ঈশ্বরের মতো হয়ে উঠতে পারে এবং সমগ্র মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে পারে যদি সে তার আত্ম-চেতনার কেন্দ্রকে অসীমভাবে বাড়িয়ে দেয়।"
"যদি তোমার নিজের মধ্যে বিশ্বাস না থাকে তবে তুমি আর কারও কাছে বিশ্বাস করতে পারবে না।"
"যদি তোমার দেহ আপন মানুষ সমাজের প্রয়োজনের জন্য জ্বলতে না থাকে, তবে এর কি প্রয়োজন?"
"আমরা কেবল যখন নিজেদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করব, তখনই আমরা আর কারো সঙ্গে প্রেম করতে পারব।"
"তুমি তোমার আশা যেন বন্ধু হয়ে থাক। সে তোমার বিপদের সময় তোমাকে সাহায্য করবে।"
"একটি ব্যক্তি যখন নিজেকে জীবনের নায়ক মনে করে, তখন তার জীবনে শক্তির বিস্তার হয়।"
"যদি আপনি আপনার মন থেকে অসংখ্য প্রশ্ন উত্পন্ন করতে পারেন, তবে আপনি সমস্ত জ্ঞান পেতে পারেন।"
"আপনার একটি বড় ইচ্ছা থাকতে হবে, যদি আপনি সমুদ্র অতিক্রম করতে পারেন। পাহাড় ভেদ করার জন্য আপনাকে যথেষ্ট শক্তিশালী হতে হবে।"
“কাপুরুষরা কখনো জয় পায় না। আমাদের ভয়, সমস্যা এবং অজ্ঞতার সাথে লড়াই করতে হবে যদি আমরা শুধু আশা করতে থাকি সাফল্য আমাদের থেকে দূরে চলে যাবে''
“সত্য জানার জন্য তিনটি বিষয় দরকার। প্রথম হল একটি শুদ্ধ ইচ্ছা, দ্বিতীয় হল শুদ্ধ বুদ্ধি, এবং শেষ হল শুদ্ধ অনুভূতি। এই তিনটি মিলে যখন আপনি সত্য চিন্তার কথা বলেন, তখন আপনি যথার্থ হয়ে ওঠেন।”
"কেবল বই পড়া থেকে মানুষ সম্পূর্ণ জ্ঞানী হয় না। কাজ করে প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে হবে।"
“মানুষের মনের শক্তির কোন সীমা নেই। এটি যত বেশি ঘনীভূত হয়, একটি বিন্দুতে সহ্য করার জন্য আরও শক্তি তৈরী হয়।"
“পুরো জীবনটাই স্বপ্নের ধারাবাহিকতা। আমার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সচেতন স্বপ্নদ্রষ্টা হওয়া, এটাই সব।"
“আগুন যে আমাদের উষ্ণ করে তা আমাদের গ্রাস করতে পারে; এটা আগুনের দোষ নয়।"
"প্রথমে নিজেকে উন্নয়ন কর, তারপরে সমাজকে উন্নয়ন কর। ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন হল চরিত্র। চরিত্রটি তৈরি হয় কঠিন পরিশ্রম এবং ধৈর্যের মাধ্যমে। একটি পবিত্র চরিত্র ব্যক্তি হল যে সর্বদা ভালো করার জন্য উদ্যমশীল থাকে। চরিত্রের প্রতিফলন হল সমস্ত সৃষ্টিতে প্রেম এবং সমমানের উপস্থাপন। চরিত্র নিজেকে তৈরি করে না বরং চরিত্রটি তৈরি করে নিজেকে। প্রতিটি মানুষ একটি পবিত্র চরিত্র অর্জন করতে পারে। একটি শক্তিশালী চরিত্র একটি শক্তিশালী মানুষ তৈরি করে। চরিত্র হল ব্যক্তিত্বের আলোকচিত্র।
"সবচেয়ে বড় সম্পদ হল একজন ব্যক্তি যিনি শক্তিশালী চরিত্র ধারণ করে।"
"কেউ রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে, কিন্তু যদি কেউ তার আবেগ এবং আকাঙ্ক্ষার দাস হয়, তবে কেউ প্রকৃত স্বাধীনতার বিশুদ্ধ আনন্দ অনুভব করতে পারে না।"
"সমস্ত শক্তি একটি পরিপূর্ণ পদার্থের ভিতরে নিহিত। আপনাকে সেটি খুঁজে বের করতে হবে।"
"স্বপ্ন যেন কোনও প্রতিবন্ধক না হয়। এটি সম্ভব না হলে স্বপ্নটি ব্যর্থ হয়ে যায়।"
"একজন মানুষ সমস্ত শক্তি নিয়ে জয় পেতে পারে, যদি তার মনে করে যে সে সবকিছু পারে।"
"যদি আপনার প্রবল ইচ্ছাশক্তি না থাকে তবে আপনার কাছে কোনও সফলতা আসতে পারে না।"
"আপনি জীবনে আপনার আত্মা সম্পর্কে শিক্ষা নেবেন না তবে আপনি জীবনে কখনই সমতুল্য সন্তুষ্টি পাবেন না।"
"মহৎ জিনিস কি কখনও মসৃণভাবে করা হয়? সময়, ধৈর্য এবং অদম্য ইচ্ছা অবশ্যই দেখাতে হবে।”
"একটি ধারণা নিন, এতে নিজেকে নিয়োজিত করুন, ধৈর্য ধরে সংগ্রাম করুন, এবং সূর্য আপনার জন্য উদিত হবে।"
"স্বাধীনতা দুর্বল দ্বারা পৌঁছানো যায় না। সমস্ত দুর্বলতা দূর করুন। আপনার শরীরকে বলুন যে এটি শক্তিশালী, আপনার মনকে বলুন যে এটি শক্তিশালী, এবং নিজের প্রতি সীমাহীন বিশ্বাস এবং আশা রাখুন।"
"গর্বিত হও যে তুমি একজন ভারতীয়, এবং গর্ব করে ঘোষণা করো, "আমি একজন ভারতীয়, প্রত্যেক ভারতীয় আমার ভাই।" বলুন, "অজ্ঞান ভারতীয়, দরিদ্র ও নিঃস্ব ভারতীয়, ব্রাহ্মণ ভারতীয়, পরিয়া ভারতীয়, আমার ভাই।"
"আপনি বিশ্বের উপর যে সম্মোহনত্বের আবরণ ফেলেছেন তা খুলে ফেলুন, মনুষ্যত্বের কাছে চিন্তা ও দুর্বলতার কথা পাঠাবেন না।"
“দাঁড়াও এবং শক্তিশালী হও! ভয় নেই। কুসংস্কার নেই। সত্যের মুখোমুখি হও!”
জতিভেদ থাকুক বা নাই থাকুক,কোন মতবাদ প্রচলিত থাকুক বা নাই থাকুক,যে-কোন ব্যক্তি,শ্রেণী,বর্ণ,জাতি বা সম্প্রদায় যদি অপর কোন ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তার ও কার্যের শক্তিতে বাধা দেয় (অবশ্য যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ শক্তি কাহারও অনিষ্ট না করে) তাহা অতি অন্যায়,এবং যে ঐরূপ করে—তাহার পতন অবশ্যম্ভাবী।
তোমরা সকলে ভাবো—‘আমরা অনন্ত বলশালী আত্মা;দেখ দিকি কি বল বেরোয়। ‘দীনহীনা!’কিসের ‘দীনহীনা’? আমি ব্রহ্মময়ীর বেটা! কিসের রোগ,কিসের ভয়,কিসের অভাব? ‘দীনহীনা’ভাবকে কুলোর বাতাস দিয়ে বিদেয় কর দিকি।
তোমাদের কি মন মুখ এক হয়েছে? তোমরা কি মৃত্যুভয় পর্যন্ত তুচ্ছ ক’রে নিঃস্বার্থভাবে থাকতে পার? তোমাদের হৃদয়ে প্রেম আছে তো? যদি এইগুলি তোমাদের থাকে তবে তোমাদের কোন কিছুকে,এমন কি মৃত্যুকে পর্যন্ত ভয় করবার দরকার নেই। এগিয়ে যাও,বৎসগণ। সমগ্র জগৎ জ্ঞানালোক চাইছে—উৎসুক নয়নে তার জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
আমি দৃঢ়ভাবে বলিতেছি,হিন্দুসমাজের উন্নতির জন্য ধর্মকে নষ্ট করিবার কোন প্রয়োজন নাই এবং ধর্মের জন্যেই যে সমাজের এই অবস্থা তাহা নহে,বরং ধর্মকে সামাজিক ব্যাপারে যেভাবে কাজে লাগানো উচিত,তাহা হয় নাই বলিয়াই সমাজের এই অবস্থা।
কেউ তোমাকে বলবে সাধু,কেউ বলবে চণ্ডাল,কেউ বলবে উন্মাদ,কেউ বলবে দানব,কোনদিকে না তাকিয়ে নিজের পথে চলে যাও,’—এই কথা বলেছিলেন বার্ধক্যে সন্ন্যাসগ্রহণকারী রাজা ভর্তৃহরি—ভারতের একজন প্রাচীন সম্রাট ও মহান্ সন্ন্যাসী।
কোন ধর্মকে ফলপ্রসূ করতে হ’লে তাই নিয়ে একেবারে মেতে যাওযা দরকার;অথচ যাতে সঙ্কীর্ণ সাম্প্রদায়িক ভাব না আসে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
হিন্দু যেন কখন তাহার ধর্ম ত্যাগ না করে। তবে ধর্মকে উহার নির্দিষ্ট সীমার ভিতর রাখিতে হইবে,আর সমাজকে উন্নতির স্বাধীনতা দিতে হইবে।
যে দেশে কোটি কোটি মানুষ মহুয়ার ফুল খেয়ে থাকে,আর দশবিশ লাখ সাধু আর ক্রোর দশেক ব্রাহ্মণ ঐ গরীবদের রক্ত চুষে খায়,আর তাদের উন্নতির কোনও চেষ্টা করে না,সে কি দেশ না নরক! সে ধর্ম,না পৈশাচ নৃত্য! দাদা,এটি তলিয়ে বোঝ—ভারতবর্ষ ঘুরে ঘুরে দেখেছি। এ দেশ দেখেছি। কারণ বিনা কার্য হয় কি? পাপ বিনা সাজা মিলে কি?
একটি কথা—মহাপুরুষেরা বিশেষ শিক্ষা দিতে আসেন,নামের জন্যে নহে,কিন্তু চেলারা তাঁদের উপদেশ বানের জ্বলে ভাসাইয়া নামের জন্য মারামারি করে—এই তো পৃথিবীর ইতিহাস।
জীবনটা ক্ষণস্থায়ী স্বপ্নমাত্র,যৌবন ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়;দিবারাত্র বল,’তুমি আমার পিতা,মাতা,স্বামী,দয়িত,প্রভু, ঈশ্বর—আমি তোমা ছাড়া আর কিছু চাই না,আর কিছুই চাই না,আর কিছুই না। তুমি আমাতে,আমি তোমাতে—আমি তুমি,তুমি আমি।’ধন চলে যায়,সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যায়,জীবন দ্রুতগতিতে চলে যায়,শক্তি লোপ পেয়ে যায়,কিন্তু প্রভু চিরদিনই থাকেন—প্রেম চিরদিনই থাকে।
তোর দুয়ারে স্বয়ং নারায়ন কাঙ্গালবেশে এসে অনাহারে মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে রয়েছেন,তাঁকে না দিয়ে খালি নিজে ও নিজের স্ত্রী পুত্রদেরই নানাপ্রকার চর্ব-চূষ্য দিয়ে পূর্তি করা-সে তো পশুর কাজ।
আপানার ভাল কেবল পরের ভালয় হয়,আপনার মুক্তি এবং ভক্তিও পরের মুক্তি ও ভক্তিতে হয়—তাইতে লেগে যাও,মেতে যাও,উন্মাদ হয়ে যাও। ঠাকুর যেমন তোমাদের ভালবাসতেন,আমি যেমন তোমাদের ভালোবাসি,তোমারা তেমনি জগৎকে ভালবাস দেখি ।
এস,মানুষ হও। নিজেদের সংকীর্ণ গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দেখ,সব জাতি কেমন উন্নতির পথে চলেছে। তোমরা কি মানুষকে ভালবাসো? তোমরা কি দেশকে ভালবাসো? তাহলে এস,আমরা ভাল হবার জন্য—উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি।
ধৈর্য,পবিত্রতা ও অধ্যবসায়ের জয় হবে।
নিরাশ হইও না। স্মরণ রাখিও,ভগবান গীতায় বলিতেছেন,‘কর্মে তোমার অধিকার,ফলে নয়।’
দৃঢ়ভাবে কার্য করিয়া যাও,অবিচলিত অধ্যবসায়শীল হও এবং প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখো।
ধীর,নিস্তব্ধ অথচ দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে। খবরের কাগজে হুজুক করা নয়। সর্বদা মনে রাখবে,নামযশ আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
পবিত্রতা,সহিষ্ণুতা ও অধ্যবসায়—এই তিনটি,সর্বোপরি প্রেম সিদ্ধিলাভের জন্য একান্ত আবশ্যক।
ভগবান যদিও সর্বত্র আছে বটে,কিন্তু তাঁকে আমরা জানতে পারি কেবল মানবচরিত্রের মধ্য দিয়ে।
কারও ওপর হুকুম চালাবার চেষ্টা ক’রো না—যে অপরের সেবা করতে পারে,সেই যথার্থ সর্দার হ’তে পারে।
কার্যক্ষেত্রে অবতরণ কর। কুড়েমির কাজ নয়। ঈর্ষা অহমিকাভাব গঙ্গার জলে জন্মের মতো বিসর্জন দাও ও মহাবলে কাজে লাগিয়া যাও। বাকি প্রভু সব পথ দেখাইয়া দিবেন। মহা বন্যায় সমস্ত পৃথিবী ভাসিয়া যাইবে।
তিনি সকলেরই হৃদয়ে বিরাজ করিতেছেন। যদি দর্পণের উপর ধূলি ও ময়লা থাকে,তবে তাহাতে আমরা
তুমি তোমার কাজ ক’রে যাও,আর মনে রেখো—‘ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিত দুর্গতিং তাত গচ্ছতি।’
দাদা,এ সব লিখিবার নহে,বলিবার নহে। আমার পত্র অন্য কেউ যেন না পড়ে,তোমরা ছাড়া। হাল ছেড় না,টিপে ধরে থেক—পাকড় ঠিক বটে,তাতে আর ভুল নাই—তবে পারে যাওয়া আজ আর কাল—এই মাত্র। দাদা, leader (নেতা) কি বানাতে পারা যায়?Leader জন্মায়। বুঝতে পারলে কিনা? লিডারি করা আবার বড় শক্ত—দিসস্য দাসঃ,হাজারো লোকের মন যোগানো।
Jealousy, selfishness(ঈর্ষা,স্বার্থপরতা ) আদপে থাকবে না—তবে leader.প্রথম by birth (জন্মগত),দ্বিতীয় unselfish(নিঃস্বার্থ ),তবে leader. সব ঠিক হচ্ছে,সদ ঠিক আসবে,তিনি ঠিক জাল ফেলছেন,ঠিক জাল গুটাচ্ছেন—বয়মনুসরামঃ,বয়মনুসরামঃ,প্রীতিঃ পরমসাধনম্ বুঝলে কি না? Love conquers in the long run, দিক্ হলে চলবে না—wait, wait (অপেক্ষা কর,অপেক্ষা কর);সবুরে মেওয়া ফলবেই ফলবে। যোগেনের কথা কিছুই লেখ নাই। রাখাল-রাজা ঘুরে ফিরে পুনর্বৃন্দাবনং গচ্ছেদিতি।…
হে বীরহৃদয় যুবকগণ,তোমরা বিশ্বাস কর যে,তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জন্মেছ। কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাকে ভয় পেও না—এমন কি আকাশ থেকে প্রবল বজ্রাঘাত হলেও ভয় পেও না—খাড়া হয়ে ওঠ,ওঠ,কাজ কর।
হে ভ্রাতৃবৃন্দ,আমাদের সকলকেই এখন কঠোর পরিশ্রম করিতে হইবে,এখন ঘুমাইবার সময় নহে। আমাদের কার্যকলাপের উপরই ভারতের ভবিষ্যত নির্ভর করিতেছে ঐ দেখ,ভারতমাতা ধীরে ধীরে নয়ন উন্মীলন করিতেছেন। তিনি কিছুকাল নিদ্রিত ছিলেন মাত্র। উঠ,তাহাকে জাগাও—আর নূতন জাগরনে নূতন প্রাণে পূর্বাপেক্ষা অধিকতর গৌরবমণ্ডিতা করিয়া ভক্তিভাবে তাঁহাকে তাঁহার শাশ্বত সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত কর।
আমার ধারণা,বেদান্ত —কেবল বেদান্তই সার্বভৌম ধর্ম হইতে পারে,আর কোন ধর্মই নয়।
আমাদের বিশ্বাস—সব প্রাণীই ব্রহ্মস্বরূপ। প্রত্যেক আত্মাই যেন মেঘে ঢাকা সূর্যের মতো;একজনের সঙ্গে আর একজনের তফাত কেবল এই—কোথাও সূর্যের উপর মেঘের আবরণ ঘন,কোথাও এই আবরণ একটু পাতলা;আমাদের বিশ্বাস-জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ইহা সকল ধর্মেরই ভিত্তিস্বরূপ;আর শারীরিক,মানসিক বা আধ্যাত্মিক স্তরে মানবের উন্নতির সমগ্র ইতিহাসের সার কথাটাই এই-এক আত্মাই বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে আপনাকে প্রকাশ করছেন।
আমাদের দেশের শতকরা নব্বই জনই অশিক্ষিত,অথচ কে তাহাদের বিষয় চিন্তা করে?এইসকল বাবুর দল কিংবা তথাকথিত দেশহিতৈষীর দল কি?
আজকাল লোকে ‘যোগ্যতমের উদবর্তন'(Survival of the fittest)—রূপ নূতন মতবাদ লইয়া অনেক কথা বলিয়া থাকে। তাহারা মনে করে—যাহার গায়ের জোর যত বেশী,সেই তত অধিক দিন জীবিত থাকিবে। যদি তাহাই সত্য হইত,তবে প্রাচীনকালের যে-সকল জাতি কেবল অন্যান্য জাতির সহিত যুদ্ধ—বিগ্রহে কাটাইয়াছে,তাহারাই মহাগৌরবের সহিত আজও জীবিত থাকিত এবং এই হিন্দুজাতি,যাহারা অপর একটি জাতিকে জয় করে নাই,তাহারাই এতদিন বিনষ্ট হইয়া যাইত।
জনৈকা ইংরেজ মহিলা আমাকে এক সময় বলেন,হিন্দুরা কি করিয়াছে? তাহারা কোন একটা জাতিকেও জয় করিতে পারে নাই! পরন্তু এই জাতি এখনও ত্রিশকোটি প্রাণী লইয়া সদর্পে জীবিত রহিয়াছে! আর ইহা সত্য নহে যে,উহার সমুদয় শক্তি নিঃশেষিত হইয়াছে;ইহাও কখনো সত্য নহে যে,এই জাতির শরীর পুষ্টির অভাবে ক্ষয় পাইতেছে। এই জাতির এখনও যথেষ্ট শক্তি রহিয়াছে। যখনই উপযুক্ত সময় আসে,যখনই প্রয়োজন হয়,তখনই এই জীবনীশক্তি মহাবন্যার মতো প্রবাহিত হইয়া থাকে।
ঈশ্বরের অন্বেষণে কোথায় যাইতেছ? দরিদ্র,দুঃখী,দুর্বল—সকলেই কি তোমার ঈশ্বর নহে? অগ্রে তাহাদের উপাসনা কর না কেন? গঙ্গাতীরে বাস করিয়া কূপ খনন করিতেছ কেন? প্রেমের সর্বশক্তিমত্তায় বিশ্বাস কর।
এই কথা মনে রেখো—দুটো চোখ,দুটো কান,কিন্তু একটা মুখ। উপেক্ষা উপেক্ষা,উপেক্ষা। ‘ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গাতিং তাত গচ্ছতি’।
এই জগতে ধনের সন্ধান করিতে গিয়া তোমাকেই শ্রেষ্ঠ রত্নরূপে পাইয়াছি;হে প্রভু,তোমারই নিকট আমি নিজেকে বলি দিলাম ।’‘ভালবাসার পাত্র খুঁজিতে গিয়া একমাত্র তোমাকেই ভালবাসার পাত্র পাইয়াছি। আমি তোমারই নিকট আমি নিজেকে বলি দিলাম’। (যজুর্বেদ সংহিতা )
সাধুতাই শ্রেষ্ঠ নীতি,এবং পরিণামে ধার্মিক লোকের জয় হইবেই। …বংস,সর্বদা মনে রাখিও আমি যতই ব্যস্ত,যতই দূরে অথবা যত উচ্চপদস্থ লোকের সঙ্গেই থাকি না কেন, আমি সর্বদাই আমার বন্ধুবর্গের প্রত্যেকের, সর্বাপেক্ষা সামান্যপদস্থ ব্যক্তির জন্যও প্রার্থনা করিতেছি এবং তাহাকে স্মরণ রাখিতেছি।
সাবধান! আমাদের মধ্যে যাহাতে কিছুমাত্র অসত্য প্রবেশ না করে। সত্যকে ধরিয়া থাকো,আমার নিশ্চয় কৃতকার্য হইবে। হইতে পারে বিলম্বে,কিন্তু নিশ্চিত কৃতকার্য হইব,এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই। কাজ করিয়া যাও। মনে কর,আমি জীবিত নাই। এই মনে করিয়া কাজে লাগো যেন তোমাদের প্রত্যেকের উপর সমুদয় কাজের ভার। ভাবী পঞ্চাশ শতাব্দী তোমাদের দিকে চাহিয়া আছে। ভারতের ভবিষ্যৎ তোমাদের উপর নির্ভর করিতেছে। কাজ করিয়া যাও ।
কার্যসিদ্ধর জন্য আমার ছেলেদের আগুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। এখন কেবল কাজ,কাজ,কাজ-বছর কতক বাদে স্থির হয়ে কে কতদূর করলে মিলিয়ে তুলনা ক’রে দেখা যাবে। ধৈর্য’অধ্যবসায় ও পবিত্রতা চাই ।
কি কারণে হিন্দুজাতি তাহার অদ্ভুত বুদ্ধি এবং অন্যান্য গুণাবলী সত্ত্বেও ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হইয়া গেল? আমি বলি,হিংসা। এই দুর্ভাগা হিন্দুজাতি পরস্পরের প্রতি যেরূপ জঘন্যভাবে ঈর্ষান্বিত এবং পরস্পরের যশখ্যাতিতে যেভাবে হিংসাপরায়ণ,তাহা কোন কালে কোথাও দেখা যায় নাই।
আমার লক্ষ্য কেবল ভেতরের আত্মতত্ত্বের দিকে;সেইটি যদি ঠিক হয়ে যায়,তবে আর সবই ঠিক হয়ে যাবে—এই আমার মত।
আমি চাই,যেন আমাদের মধ্যে কোনরূপ কপটতা,কোনরূপ লুকোচুরি ভাব,কোনরূপ দুষ্টামি না থাকে। আমি বরাবরই প্রভুর উপর নির্ভর করিয়াছি,দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল সত্যের উপর নির্ভর করিয়াছি। আমার বিবেকের উপর এই কলঙ্ক লইয়া যেন মরিতে না হয় যে,আমি নামের জন্য,এমন কি,পরের উপকার করিবার জন্য লোকোচুরি খেলিয়াছি। এক বিন্দু দুর্নীতি,বদ মতলবের একবিন্দু দাগ পর্যন্ত যেন না থাকে ।
কাজ চিরকালই ধীরে ধীরে হয়ে এসেছে,চিরকালই ধীরে হবে;এখন ফলাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ ক’রে শুধু কাজ করেই খুশী থাকো; সর্বোপরি,পবিত্র ও দৃঢ়-চিত্ত হও এবং মনে প্রাণে অকপট হও—ভাবের ঘরে যেন এতটুকু চুরি না থাকে,তা হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
পাহাড় যদি মহম্মদের নিকট না যায়,মহম্মদ পাহাড়ের নিকট যাবেন। অর্থাৎ গরীবের ছেলেরা যদি স্কুলে লেখাপড়া শিখতে না পারে,বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের শিখাতে হবে।
প্রত্যেক দাসজাতির মূল পাপ হচ্ছে ঈর্ষা। আবার এই ঈর্ষা দ্বেষ ও সহযোগিতার অভাবই এই দাসত্বকে চিরস্থায়ী ক’রে রাখে। ভারতের বাইরে না এলে আমার এ মন্তব্যের মর্ম বুঝবে না।
কোন মন্তব্য নেই: