টাকি ভ্রমণ গাইড
উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় নদীতে ঘেরা একটি সুন্দর ভ্রমণস্থল "টাকি" । ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ইচ্ছামতী নদী তীরের এই ভ্রমণ কেন্দ্র ইদানিং অনেকেরই মনে ধরেছে । নদীর ওপারে বাংলাদেশের মাটি অনেককেই ভাবুক করে তোলে , নৌকা বিহারে গিয়ে জলের মাঝে দেখা হতেই পারে ওপারের বাঙালি মানুষের সাথে । দুর্গাপূজার ভাসান এর সময় একাকার হয়ে যায় দুই দেশের মানুষ , একসাথে দুপারের মানুষজন নদী তীরে একত্রিত হয় বিসর্জনের জন্য । শীতের সময় দেখা মেলে বহু পরিযায়ী পাখির । বর্ষায় যখন নদীতে জলোচ্ছ্বাস ভয়ের কারণ হয় তখনও অনেকে ছুটে যায় টাটকা ইলিশের তাড়নায় ।
হাতে সময় নিয়ে ঘুরে দেখা যায় রামকৃষ্ণ মিশন , তিনশো বছরের , পুরনো জোড়া শিব মন্দির , কালী মন্দির নন্দদুলাল মন্দির , পুরনো জমিদার বাড়ি ধ্বংসস্তূপ ও একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের স্মারক । তবে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মাছরাঙ্গা দ্বীপ । টাকি থেকে কুড়ি থেকে 25 মিনিটে নৌকায় পৌঁছে যাওয়া যায় এই দ্বীপে , সবুজে মোড়া এই দিক থেকে দেখা যায় অনতিদূরের বাংলাদেশের গ্রাম ।
টাকিতে থাকার জন্য যোগাযোগ করুন পঞ্চায়েত সমিতির সাথে ফোন নাম্বার( ০৩২১৭ ২৩৩২৭৬ ) ।
কিভাবে যাবেনঃ শিয়ালদা থেকে হাসনাবাদ লোকাল ট্রেনে বারাসাত হয়ে সহজেই পৌঁছানো যায় টাকি । রেলপথের দূরত্ব 74 কিলোমিটার, সময় লাগে দুই ঘণ্টার মত শিয়ালদা থেকে লোকাল ট্রেন ছাড়াও বারাসাত থেকে সারা দিনে ছয় জোড়া লোকাল ট্রেন আসছে টাকিতে । স্টেশন থেকে ভ্যান রিক্সা , টোটো ও অটো পেয়ে যাবেন ।
ইতিহাসঃ ১৮৬৯ সালে টাকি পুরসভার প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময়ে টাকির বেশির ভাগ জায়গা ছিল জঙ্গলে ভরা। রাজা প্রতাপাদিত্যের বংশধর কৃষ্ণদাস রায়চৌধুরী টাকিতে বসতি স্থাপন করেন। বর্তমান ইছামতি নদীর সে সময়ে নাম ছিল যমুনা-ইছামতী। কৃষ্ণদাসের চেষ্টায় টাকি সম্ভ্রান্ত এবং ব্রাহ্মণ পরিবারের বাসভূমিতে পরিণত হয়। নন্দদুলালের বিগ্রহ স্থাপনের জন্য টাকিতে জালালপুর গ্রামের বেশ নামডাক ছিল। রাজা মানসিংহ প্রতাপাদিত্যের সাম্রাজ্যে আক্রমণ শানানোর জন্য টাকিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দু’পক্ষের লড়াই হয় বসিরহাটের সংগ্রামপুরে। প্রতাপাদিত্যের সৈন্যদলকে তাড়া করে মানসিংহের বাহিনী। টাকি শ্মশানের পাশ দিয়ে ইছামতী পার হয়ে রক্ষা পায় প্রতাপাদিত্যের দলবল। সেই ইতিহাসকে মনে রেখেই শ্মশান-সংলগ্ন রাস্তার নাম পরে রাখা হয় মানসিংহ রোড। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে টাকি কুলেশ্বরী কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠা হয়।
টাকির কাছেই ইছামতী নদীর তীরে সোলাদানার বাগুন্ডিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লবণ ব্যবসার কেন্দ্র স্থাপন করে। যেটি বর্তমানে বসিরহাট হিসেবে খ্যাত।
রাজা রামমোহন রায়ের পরামর্শে এবং খ্রিস্টান মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফের পরিচালনায় জমিদার কালীনাথ ১৮৩২ সালের ১৪ জুন টাকিতে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল স্থাপন করেন। তাঁর চেষ্টায় টাকিতে শিক্ষা-সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে। ১৮৫১ সালে টাকি সরকারী স্কুল ও ১৮৬২ সালে বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন হয়।
( তঃসূঃ উইকিপিডিয়া )
টাকি ভ্রমনের ভিডিও দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না
১ দিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন নদীতে ঘেরা " টাকি "
Reviewed by Wisdom Apps
on
April 30, 2019
Rating:
Reviewed by Wisdom Apps
on
April 30, 2019
Rating:



No comments: