নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের উক্তি - অসাধারন ও অনুপ্রেরণামূলক উক্তি
• তােমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তােমাদের স্বাধীনতা দেব।
• স্বাধীনতাই জীবন, স্বাধীনতার সন্ধানে জীবন দানে অবিনশ্বর গৌরব।
• সাধনার উদ্দেশ্য মনুষ্যজীবনের রূপান্তর করাে।
• রাজনীতির ক্ষেত্রে মধ্যে মধ্যে মতান্তর হওয়া অনিবার্য এবং মতান্তরের জন্য ঝগড়া বিবাদ হওয়াতে বােধ হয় তদ্রুপ অনিবার্য। কিন্তু মতান্তর যেন মনান্তরে পরিণত না হয় এবং ব্যক্তি নিন্দা ও গালাগালি যেন আমাদের অস্ত্র না হইয়া দাঁড়ায়।
• সার্থক শিল্পী বা সঙ্গীতজ্ঞের এমন একটা সুকুমার স্পর্শবােধ এবং এমন সূক্ষ্ম অনুভূতি থাকে যা তার শিক্ষা বা চর্চা থেকে পুরােপুরি ব্যাখ্যা করা যায় না। যদি শুরু থেকেই তার মধ্যে সহজাত একটা শৈল্পিক প্রবণতা না থাকে সে কখনােই শিল্প-নৈপুণ্যের শীর্ষে উঠতে পারে না।
• যৌবন সর্বকালে সর্বদেশে সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষ্মীহারা।
• বিভিন্ন সভ্যতার ও শিক্ষার সংঘর্ষের দরুন চিন্তাজগতে বিপ্লব উপস্থিত হয়। এই বিপ্লবই জাতির চৈতন্যের লক্ষণ।
• অন্তরের জাগরণ থেকে সজাত এবং ভবিষ্যৎ সমাজ সম্পর্কে এক নতুন বিশ্বাস এবং স্বপ্ন দ্বারা অনুপ্রাণিত যুব আন্দোলন ব্যতীত যুবকদের দ্বারা পরিচালিত প্রত্যেকটি আন্দোলনকেই আমি যুব-আন্দোলন বলে মনে করি না।
• আমরা ভারতবাসী-অতএব ভারতের মঙ্গলই আমাদের মঙ্গল।
• সত্য এবং ত্যাগ—এই দুইটি আদর্শ রাজনীতির ক্ষেত্রে যতই লােপ পাইতে থাকে, রাজনীতির কার্যকারিতা ততই হ্রাস পাইতে থাকে।
• জাতিকে যদি জাগাইতে হয় তাহা হইলে বর্তমানের প্রতি প্রবল অসন্তোষ সৃষ্টি করিতে হইবে এবং এক উচ্চ আদর্শের ধ্যান শিখাইতে হইবে। তাই আমাদের যুব-আন্দোলনের একদিকে আছে অসন্তোষ, আর একদিকে আছে আদর্শের আকর্ষণ।
• ব্রহ্মচর্য দুই রকম আছে-প্রথম অবস্থায় ব্রহ্মচর্য মানে শরীরকে শুদ্ধ রাখা। এর পরের অবস্থায় ব্রহ্মচর্য মানে নারীর প্রতি কোনাে কামনা পােষণ না করা।
• কোনাে ‘ism-এর মতবাদের দ্বারা মানবজাতির উদ্ধার হইতে পারে , যদি সর্বাগ্রে আমরা মানুষােচিত চরিত্রবল লাভ না করিতে পারি।
• রাজনীতি এমন কিছু যা গতিশীল এবং যার নিত্য পরিবর্তন ঘটছে। কিছু না করে, অতীতে যে স্বার্থত্যাগ ও সেবা করেছ তারই ওপর ভরসা করে যদি বসে থাক এবং আবদার করাে সবাই সব সময়ে তােমাকে মাথায় তুলে রাখবে, তাহলে তােমার কপালে দুর্গতি অনিবার্য।
• ভয় জয় করার উপায় শক্তিসাধনা। দুর্গা, কালী প্রভৃতি মূর্তি শক্তির রূপবিশেষ। শক্তির যে-কোনাে রূপ মনে মনে কল্পনা করিয়া তাহার নিকট শক্তি প্রার্থনা করিলে এবং তাহার চরণে মনের দুর্বলতা ও মলিনতা বলি রূপে প্রদান করিলে মানুষ শক্তিলাভ করিতে পারে।
• আলােকে জগৎ উদ্ভাসিত করিবার জন্য যদি গগনে সূর্য উদিত হয়, গন্ধ বিতরণের উদ্দেশ্যে বনমধ্যে কুসুমরাজি যদি বিকশিত হয়, অমৃতময় বারিদান করিতে তটিনী যদি সাগরাভিমুখে প্রবাহিত হয়। যৌবনের পূর্ণ আনন্দ ও ভরা প্রাণ লইয়া আমরাও মর্তলােকে নামিয়াছি একটা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য।
• স্বাধীনতা বলিতে আমি বুঝি সমাজ ও ব্যক্তি, নর ও নারী, ধনী ও দরিদ্র সকলের জন্য স্বাধীনতা, শুধু ইহা রাষ্ট্রীয় বন্ধন মুক্তি নহে, ইহা অর্থের সমানবিভাগ, জাতিভেদ ও সামাজিক অবিচারের নিরাকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণতা ও গোঁড়ামি বর্জনও সূচিত করে।
• কেহ কেহ অজ্ঞতাবশত মনে করিয়া থাকেন যে, যুব আন্দোলন রাষ্ট্রনৈতিক আন্দোলনের নামান্তর মাত্র কিন্তু এ ধারণা সত্য নয়। ফুল যখন ফোটে তখন প্রত্যেক পাপড়ির মধ্যে তার সুষমা ও সৌরভ আত্মপ্রকাশ লাভ করে ।
• অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা বিপ্লবীদের লক্ষ্য নয়। অবশ্য সত্য যে কখনাে-কখনাে তারা বাস্তবিকই সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় গ্রহণ করে থাকেন—কিন্তু তাদের চরম উদ্দেশ্য সন্ত্রাসবাদ নয়— বিপ্লব এবং বিপ্লবের উদ্দেশ্য একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
• যে নেতা জনতার মনস্তত্ত্ব ভালাে মতাে বােঝে সেই নেতারই প্রভাব বেশি, ক্ষমতা বেশি, সাফল্য বেশি।
• পাগল না হলে কেহ বড় হইতে পারে না। কিন্তু সকল পাগল বড় হয় না। ...শুধু পাগল হইলে চলে না। আর কিছু চাই। পাগলামির ভিতর আত্মসংযম হারাইলে কোনাে প্রশ্নের মীমাংসা হইতে পারে । আবেগের ভিতর আত্মস্থ হওয়া চাই।
• বর্তমানের সকল প্রকার বন্ধন, অত্যাচার, অবিচার ও অনাচার ধ্বংস করিয়া নূতন সমাজ ও নূতন জাতি সৃষ্টি করাই তরুণদের আদর্শ হওয়া উচিত।
• প্রথমত জাতীয় ইতিহাস, জাতীয় আদর্শ, জাতীয় ধর্ম ও সমাজনীতির প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া নূতন প্রণালীর প্রবর্তন করিতে হইবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশে যেরূপ দারিদ্র সেই দারিদ্র্য যাহাতে দূর করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হইবে। তৃতীয়ত, আমাদের দেশের ছাত্রদের যেরূপ শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সেই শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপযােগী শিক্ষার প্রণালীই আমাদের উদ্ভাবন করিতে হইবে।
• জাতীয়বাদের সহিত আন্তর্জাতিকতাবাদের কোনাে বিরােধ নাই। আসলে আন্তর্জাতিকতাবাদের পূর্ব শর্তই জাতীয়তাবাদ।
• একটি জাতি বেঁচে থাকতে পারে, যতক্ষণ যে ব্যক্তিদের নিয়ে সেই জাতি গঠিত তারা যখনই প্রয়ােজন দেখা দিবে জাতির স্বার্থে মৃত্যুবরণ করিতে প্রস্তুত থাকিবে।
• ধ্বংস ও সৃষ্টিলীলার মধ্যে যে আত্মহারা হইতে পারে একমাত্র সেই ব্যক্তিই তরুণ। তারুণ্য যার আছে সে ধ্বংস ও সংগ্রামের ছায়া দর্শনে ভীত হয় না। অথবা নব সৃষ্টিরূপ কার্যে অপারগ হয় না।

কোন মন্তব্য নেই: