বাবা নিজের হাতে মেয়ের নামের ট্যাটু করার পর মেয়ে কি করলো ? - দিপা নাইডুর ঘটনাটা পড়ুন

জীবনের ছোট ছোট ঘটনা গুলো জীবনে আশ্চর্য রকমের প্রভাব ফেলতে পারে - নীচের এই ঘটনাটি থেকে আপনি বুঝতে পারবেন । ঘটনাটি শেয়ার করেছেন তামিলনাড়ুর এক গৃহবধূ  দিপা নাইডু। ঘটনাটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন -

"আমার নাম দিপা, দু বছর আগে আমার স্বামী তার বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গিয়ে হাতের কব্জিতে আমাদের মেয়ের নামে একটি ট্যাটু করে আনেন। তিনি বাড়ি এসে আমাদের সবাইকে ট্যাটুটি দেখান। 
আমাদের ছেলে যখন জানতে পারলো যে তার বাবা শুধুমাত্র তার বোনের নাম ট্যাটু করে এসেছে  তখন তার মুখ গোমড়া হয়ে গেল অবশ্য তার জন্যে আনা চকলেট, খেলনা পাওয়ার পরেই সে সেসব ভুলে গেলো। আমাদের মেয়ে ট্যাটু দেখে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে গেলো, সে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরলো, কপালে চুমু খেলো এবং তার বাবাকে প্রশ্ন করলো যে তার এটি করতে গিয়ে ব্যাথা লেগেছে কিনা ?

এর উত্তরে আমার স্বামী বললেন, "আমি তোমার জন্য সব ব্যাথা সহ্য করতে পারি.।"
আমি জানিনা এর পর কি হলো, তার বাবার প্রতি তার মনোভাবের পরিবর্তন ঘটে গেল । 
সে তার বাবার প্রতি মায়ের মতো আচরণ শুরু করলো। যদিও আগে থেকে সে তার ভাইয়ের প্রতি মায়ের মতো আচরণ করতো এখন বাবার সাথে শুরু করলো। (আমি মনে মনে ভাবলাম তাহলে আমার ভূমিকা কি?)
সে তার বাবার খেয়াল রাখা, যত্ন নেওয়া শুরু করলো। তার বাবা তার ওপর রাগ করলেও সে রাগ করতো না। সে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করতো 'তার দিন কেমন কাটলো?, সে কি খাবার খেয়েছে?' তার হাঁচি হলে সে তার বাবার বুকে ভিক্স মালিশ করে দেওয়া শুরু করলো । সে তার বাবার কাছ থেকে কিছুই চায় না, কখনও কখনও আমার ছেলে যখন কিছু চায় তখন সে বলে, "অর্জুন, বাবাকে জ্বালাতন করো না, বাবার যখন ব্যস্ততা কমবে তখন তুমি না চাও তোমাকে দেবেন।"

প্রথমে আমি ভাবলাম এটি কেবল কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের জন্য হবে, কয়েক মাস পরে সে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে, যখন তার চাওয়া কোনো জিনিস তার বাবা দিতে প্রত্যাখ্যান করবে।

9-10 মাস আগে, একদিন, সে আস্তে আস্তে স্কুলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। আমার স্বামী খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠেন , সেদিন আমাদের মেয়ে স্কুলে যাওয়ার দেরি দেখে উনি চিৎকার করে উঠলেন। তিনি বলেন, "আমি এই সঞ্জনাকে ঘৃণা করি, দিনের শুরুতে তুমি এত অলস হতে পারো কিভাবে তবে দিনটা কেমন কাটবে"।
সে শুধুমাত্র হাসলো এবং স্কুলের জন্য প্রস্তুত হলো। 
আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম,শরীর ঠিক আছে কিনা, সে শুধু মাথা নাড়িয়ে স্কুলে চলে গেল।
1 ঘন্টা পরে, আমি স্কুল থেকে একটি ফোন পেয়েছিলাম। রিসেপশনিস্ট বলেছিলেন যে আমার মেয়ের জ্বর হয়েছে এবং দুবার বমি হয়ে গেছে। তারা আমাকে স্কুল থেকে নিয়ে যেতে বলেছিল। আমি কথাটা জানানোর জন্য তার বাবার কাছে একটা ফোন করি তাকে নিয়ে আসার জন্য, কিন্তু 4-5 বার চেষ্টা করার পরও তাকে ফোনে পাইনি। আমি আমার স্কুটার নিয়ে তাকে নিতে গিয়েছিলাম। আসার সময় আমি ওকে বলেছিলাম, " তোমার ভালো না লাগলে বলতে পারতে, আমি তোমাকে স্কুলে পাঠাতাম না। তোমার কি খারাপ লেগেছিলো তোমার বাবা বকেছিলেন বলে, তাই কি তুমি কিছু না বলে স্কুলে গেছিলে?"
তার উত্তর আক্ষরিক অর্থে আমার চোখে জল এনে দিয়েছিল।

সে আমাকে জাপটে ধরে আমার পাশে বসে ও বলে, "না মা আমি কোনোদিন বাবার কোনো কথায় রাগ করবো না, এটা সত্যি যে বাবা কিছু সময় না বুঝেই চেঁচামেচি করে, কিন্তু বাবা আমাকে খুব ভালোবাসে। যদি তাই না হতো তাহলে বাবা কি অতো ব্যাথা সহ্য করে আমার নামের ট্যাটু করতো?"(সে তখনও প্রসব ব্যাথা সম্মন্ধে কিছু জানতোনা তাই হয়তো ওর বাবার ব্যাথাটা তার কাছে অনেক বেশি মনে হয়েছিলো।)  যে মুহূর্তে সে কথাটি বলেছিলো আমার চোখে আপনাআপনি জল চলে আসে এটা ভেবে যে একটি আট বছর বয়সের মেয়ে কিকরে এতটা ভাবতে পারে? সে কিভাবে ভালবাসা আদর এত গভীর ভাবে বুঝতে পারে?


হ্যাঁ, কখনো এই ছোট জিনিষ গুলি অনেক কিছু প্রকাশ করে। এই ছোট্ট ট্যাটুটি বাবা এবং মেয়ে দুজনের কাছেই অতি মূল্যবান। জীবন সুন্দর। এটা কে আরো বেশি সুন্দর করা যাক এই রকম মুহূর্ত ও স্মৃতি গুলি দিয়ে।

ভাবছেন , আমার ছেলে এমন কিছু করেছে কিনা ? গতবার ওর জন্মদিনে আমি একটি মেলেটারী ড্রেস কিনে দিয়েছিলাম । ওর খুব শখ বড় হয়ে মেলেটারী হওয়া । এই কারনে ওর জামায় সেলাই করে ওর নামের একটা ব্যাজ লাগিয়ে দিয়েছিলাম । জামাটা পড়ে , আমার ছেলে যেভাবে কেঁদেছিল , এখনও ভাবলে আমার আশ্চর্য লাগে । হাসি খুশি একটা বাচ্চা যে আনন্দে এত আবেগপ্রবন হয়ে উঠতে পারে আমি কোনোদনিও ভাবিনি ।

উপরে আমাদের পরিবারের ছবি দিলাম - আমার স্বামী , মেয়ে , ছেলে আর আমাকে নিয়ে আমাদের ছোট্ট পরিবার । আমার এই ঘটনাটি আপনার ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন -


বাবা নিজের হাতে মেয়ের নামের ট্যাটু করার পর মেয়ে কি করলো ? - দিপা নাইডুর ঘটনাটা পড়ুন বাবা নিজের হাতে মেয়ের নামের ট্যাটু করার পর মেয়ে কি করলো ? - দিপা নাইডুর ঘটনাটা পড়ুন Reviewed by Wisdom Apps on October 23, 2018 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.